- আদালতের-সুরক্ষা-পেল-বাংলাদেশের-মহাবিপন্ন-হাতিদেশে ব্যক্তিপর্যায়ে হাতি পালনে লাইসেন্স দেয়া স্থগিত করেছে হাইকোর্ট।
বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে এখন মাত্র ২০০টি হাতি রয়েছে, যাদের প্রায় অর্ধেক বন্দী অবস্থায় রয়েছে।
চাঁদাবাজির কাজে হাতির বাণিজ্যিক ব্যবহার বন্ধে ব্যক্তিপর্যায়ে হাতি পালনে লাইসেন্স দেয়া ও বিদ্যমান লাইসেন্স নবায়ন কার্যক্রম স্থগিত করেছে হাইকোর্ট।
মানুষের নিয়ন্ত্রণে রেখে হাতিকে সার্কাসে ব্যবহার, হাতির পিঠে ভ্রমণ, বিয়ে বাড়িতে শোভাবর্ধন এবং বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের র্যালিতে ও বিজ্ঞাপনের মতো বিভিন্ন বিনোদনের কাজে হাতির ব্যবহার বন্ধে রিট করা হয়।
হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ১৮ ফ্রেব্রুয়ারি এ রিট করেন অভিনেত্রী জয়া আহসান এবং প্রাণী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন পিপল ফর এনিমেল ওয়েলফেয়ার (প) ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপারসন স্থপতি রাকিবুল হক এমিল। তাদের পক্ষে আবেদন জমা দেন ব্যারিস্টার সাকিব মাহবুব।
হাতির ওপর নির্যাতন বন্ধ, বিনোদনের কাজে মহাবিপন্ন প্রাণীর অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে জনগণের জানমালের ক্ষতি বন্ধ করতে আদালতের শরণাপন্ন হন রিটকারীরা।
বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে এখন মাত্র ২০০টি হাতি রয়েছে, যাদের প্রায় অর্ধেক বন্দী অবস্থায় রয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, বাংলাদেশ এশিয়ান হাতির অন্যতম প্রধান আবাসস্থল ছিল, কিন্তু এখন হাতি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।
হাতিকে লগ বা কাঠে গুঁড়ি তোলার কাছে ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশের বন বিভাগ থেকে লাইসেন্স দেয়া হয়। কিন্তু এদের মধ্যে অনেক হাতি সার্কাসে চলে যায়, যা লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করে।
প ফাউন্ডেশনের প্রধান রাকিবুল হক এমিল বলেন, ‘হাতিদের প্রশিক্ষণের নামে সার্কাস পার্টিসহ প্রাইভেট লাইসেন্সধারীরা নিষ্ঠুরভাবে হাতির বাচ্চাদের তাদের মায়ের থেকে আলাদা করে। কয়েক মাস ধরে বেঁধে রাখে এবং তারপর কৌশল শেখানোর জন্য তাদের নির্যাতন করে।’
তিনি জানান, এখন আশা করা হচ্ছে, বন্দী হাতিদের পুনর্বাসন করা যাবে।
হাইকোর্টের সিদ্ধান্তের বিষয়ে অভিনেত্রী জয়া আহসান বলেন, “আশা করছি এর মাধ্যমে হাতিরা ‘প্রশিক্ষণ’ নামক অত্যাচার থেকে রক্ষ পাবে।”
গত বছর একটি হাতি রাস্তায় চাঁদা তোলার কাছে ব্যবহারের সময় ট্রেনের ধাক্কায় মারা যায়। এ ছাড়া ২০১৯ সালে রাস্তা থেকে দুটি ক্ষতবিক্ষত হাতি উদ্ধার করে পুলিশ। এ হাতিগুলোও চাঁদাবাজির কাজে ব্যবহার হচ্ছিল।
এমিল জানান, বাংলাদেশের হাতিদের তিন ভাগে দেখা যায়। পরিযায়ী (যারা আশপাশের দেশ থেকে ট্রেইল ধরে আসে এবং চলে যায়), বাংলাদেশের বনাঞ্চলে বসবাসকারী হাতি এবং সরকার ও ব্যক্তি মালিকানায় বন্দী হাতি।
তিনি বলেন, ‘আমাদের রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য আদালত যে রুল দিয়েছেন, তা এই বন্দী হাতিদের জন্য। অন্য দুই ক্যাটাগরির হাতি যেসব সমস্যা বা বিপদের মাঝে আছে তা নিয়ে অনেক এনজিও ও বন বিভাগ টুকটাক কাজ দেখালেও, একদম নিশ্চুপ থাকে এই বন্দী হাতিদের নিয়ে।’
হাতিকে অমানুষিক নির্যাতনের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ বন্ধ, হাতিকে বিনোদনের কাজে ব্যবহার এবং হাতি দিয়ে চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে প ফাউন্ডেশন বেশ কয়েক বছর ধরে নানান কর্মসূচি দিয়ে আসছে। এর মধ্যে দুইবার বন ভবন ঘেরাও করেন প্রাণী অধিকারকর্মীরা।