লিভারপুলের লজ্জাজনক হারের পর, সালাহর পা আর আগের মতো নেই!

স্পোর্টস ডেস্ক ::

 

গত মৌসুমে ম্যানচেস্টার সিটির যে অবস্থা হয়েছিল, তার চেয়েও খুব বাজে পরিস্থিতি এবার লিভারপুলের। একাই দলবদলের বাজারে লিভারপুল খরচ করেছিল সাড়ে তিনশ’ মিলিয়ন ইউরোর ওপর। কিন্তু ফল, পুরোপুরি অশ্বডিম্ব। টানা পরাজয়ের মধ্যে রয়েছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবটি। কি লিগ, কি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ- সব জায়গাতেই একই অবস্থা অল রেডদের। সর্বশেষ তারা ডাচ ক্লাব পিএসভির আইন্দোভেনের কাছে ৪-১ গোলে হেরেছে তারা।

 

লিভারপুলের এই পরাজয়ের পর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন ক্লাবটির সাবেক ফুটবলার জেমি ক্যারাগার। বিশেষ করে তিনি সমালোচনা করলেন মোহাম্মদ সালাহর। তার মতে, সালাহর পা আর আগের মতো নেই।

 

লিভারপুলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স যেন এক গভীর সংকটের দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। টানা হতাশাজনক ফলাফলের মধ্যে সর্বশেষ পিএসভির কাছে গোলের লজ্জাজনক পরাজয়ের পর দলকে নিয়ে প্রশ্ন উঠছে সব দিক থেকেই। এ অবস্থায় ক্লাবের কিংবদন্তি সাবেক ডিফেন্ডার জেমি ক্যারাগার প্রকাশ্যে ক্ষোভ ঝাড়লেন খেলোয়াড়দের প্রতি। সেসঙ্গে কঠোর সমালোচনা করলেন মোহামেদ সালাহ ও ভিরগিল ফন ডাইককে নিয়ে।

 

সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে লিভারপুল গত ১২ ম্যাচের মধ্যে হেরেছে ৯টিতে এবং শেষ তিন ম্যাচেই তারা তিন গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে। এই পারফরম্যান্সের কারণে ম্যানেজার আরনে স্লটকে ঘিরে চলছে তীব্র আলোচনা। যিনি মাত্র ছয় মাস আগেই প্রিমিয়ার লিগ জয়ের উৎসবে মেতেছিলেন।

 

সিবিএস স্পোর্টস-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্যারাগার বলেন, ‘আমি খেলোয়াড়দের ওপর খুবই রাগান্বিত; কিন্তু একটা সময় আসে যখন কোনো ম্যানেজারের জন্য অবস্থান রক্ষা করা অসম্ভব হয়ে পড়ে।’

 

তিনি যদিও এখনই স্লটকে বরখাস্ত করার পক্ষে নন, তবে সতর্ক করেছেন, এভাবে চলতে থাকলে বিষয়টি ‘অস্থিতিশীল’ হয়ে উঠবে। ‘ফন ডাইক আগের মতো নেই, সালাহর পায়ের শক্তিও কমে গেছে।’

 

ক্যারাগার লিভারপুলের তিন মূল স্তম্ভ- অ্যালিসন, ফন ডাইক ও সালাহকে উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন। তার মতে লিভারপুলের সাফল্যের ভিত্তি তৈরি করেছিলেন এ তিনজন, কিন্তু এখন তারা আগের মতো দলকে টেনে নিয়ে যেতে পারছেন না।

 

তিনি বলেন, ‘ফন ডাইক এখন আর আগের মতো প্রভাবশালী নন। আর মোহাম্মদ সালাহকে দেখে মনে হচ্ছে তার পায়ের শক্তি আগের মতো নেই।’

 

সালাহ এবার এখনও পর্যন্ত ১৮ ম্যাচে মাত্র ৪ গোল করেছেন- যা তার স্বাভাবিক মানের তুলনায় অনেক নিচে। ক্যারাগারের মতে, তারা এতদিন দলকে ‘কাঁধে তুলে’ চলেছেন; কিন্তু এখন নিজেদেরও সহায়তা প্রয়োজন।

 

ক্যারাগার সালাহর ভূমিকা নিয়েও হতাশ, ‘আমি চাই সালাহ কথা বলুক- দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে, ড্রেসিং রুমের পরিবেশ নিয়ে, সমর্থকদের আশা দেওয়ার জন্য হলেও।’

 

তার মতে, কঠিন সময়ে দলের সবচেয়ে বড় তারকারা সামনে এসে কথা বললে সমর্থকদের মনোবল বাড়ে। ক্যারাগার সতর্ক করে বলেন, ‘এটাই লিভারপুলের ভবিষ্যতের একটি ঝলক, যখন সালাহ, ফন ডাইক বা অ্যালিসন আর দলে থাকবে না।’

 

তিনি আরও যোগ করেন যে বাকী খেলোয়াড়রা দায়িত্ব পালন করছেন না। যারা এতদিন বড় তারকাদের ছায়ায় খেলেছেন, তারা এখন নিজেদের সামর্থ্য দেখাতে পারছেন না। ফলে কোচ স্লটের ওপর চাপ বাড়ছে দ্রুতই। লিভারপুল ‘সেভিং ক্লাব’ না হলেও, যদি এই ধারা চলতে থাকে তাহলে স্লটের অবস্থান থাকাই কঠিন হয়ে পড়বে।