জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে প্রবাসী ভোটারদের অ্যাপে নিবন্ধনের সময় বাড়ানো এবং বাংলাদেশি পাসপোর্টকে ভোটারের পরিচয়পত্র হিসেবে বিবেচনা করে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করেছে বিএনপি।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এসব প্রস্তাব দিয়েছে। প্রতিনিধিদলে নেতৃত্ব দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে গত ১৯ নভেম্বর থেকে আট অঞ্চলে ভাগ করে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপে নিবন্ধন চলছে। অঞ্চলভেদে সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এরমধ্যে সময় বাড়ানোর প্রস্তাব আনলো বিএনপি।
গত ১৮ নভেম্বর ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপ উদ্বোধন করেন সিইসি নাসির উদ্দিন। ওইদিনই জাতীয় নির্বাচনের জন্য মোট ১৪৮টি দেশে পোস্টাল ভোটিং নিবন্ধনের সময়সূচি ঘোষণা করে ইসি।
নিবন্ধনের সময়সূচি অনুযায়ী, ২৪ নভেম্বর থেকে ২৮ নভেম্বর উত্তর আমেরিকা, ওশেনিয়া; ২৯ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর ইউরোপ; ৪ ডিসেম্বর থেকে থেকে ৮ ডিসেম্বর সৌদি আরব; ৯ ডিসেম্বর থেকে ১৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং ১৪ ডিসেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বর মধ্যপ্রাচ্যে (সৌদি আরব ছাড়া অন্য দেশগুলো) বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা ভোটার হতে নিবন্ধন করতে পারবেন।
ইসি জানিয়েছে, পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিরা সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি গণভোটেও ভোট দিতে পারবেন।
এদিন বিকেলে সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের বলেন, যেসব দেশে প্রবাসী বাংলাদেশির সংখ্যা অনেক বেশি, তাদের অনেকেই দূরবর্তী বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাস করেন। ফলে তাদের পক্ষে নিবন্ধন করা কঠিন। তাই আমরা অনুরোধ করেছি, এসব দেশে নিবন্ধনের সময়সীমা বাড়ানো হোক, যেন সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটার হতে পারেন।
তিনি জানান, নির্বাচন কমিশন তাদের আশ্বস্ত করেছে যে, তাদের সিডিউলে এক ধরনের সুযোগ আছে—মূল নিবন্ধন শেষে যারা বাদ পড়বে, তাদের জন্য অতিরিক্ত নিবন্ধনের ব্যবস্থা রাখা হবে।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, এটিকে ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে দেখছি। আরেকটি বিষয় হলো, প্রবাসীদের অনেকেরই এনআইডি নেই। বাস্তব কারণে বেশিরভাগই এনআইডি করতে পারেননি এবং সব দেশেই নতুন এনআইডি দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তাই আমরা প্রস্তাব করেছি, বাংলাদেশি পাসপোর্টকেও পরিচয়পত্র হিসেবে ধরে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
এসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশন বিএনপির সহযোগিতা চেয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহযোগিতার কথা জানিয়েছি। আমরা দলের পক্ষ থেকেও উদ্যোগ নিচ্ছি—যেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা নিবন্ধনে উৎসাহিত হন। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিজেও নির্দেশনা দিয়েছেন—দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় প্রবাসীদের অংশগ্রহণ জরুরি।
প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন—বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লা ও নির্বাচন কমিশনের সাবেক অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ জকরিয়া।







