পাকিস্তানের পার্লামেন্ট নতুন সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে দেশটির সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরকে অতিরিক্ত ক্ষমতা ও আজীবন দায়মুক্তি প্রদান করেছে। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) অনুমোদিত ২৭তম সংশোধনী আইনের মাধ্যমে তাকে পাকিস্তানের নৌ ও বিমান বাহিনীরও তত্ত্বাবধান করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
সংশোধনীতে বলা হয়েছে, মুনির ফিল্ড মার্শাল পদবী ও পোশাক আজীবনের জন্য থাকবে, এবং প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে রাষ্ট্রপতি তাকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব প্রদান করতে পারবেন। এর ফলে তার রাজনৈতিক ও সামরিক প্রভাব দীর্ঘকাল ধরে অব্যাহত থাকবে।
সরকারি পক্ষের যুক্তি, নতুন আইন সশস্ত্র বাহিনীকে প্রশাসনিক কাঠামো প্রদান করবে এবং বিচার বিভাগের কার্যকারিতা উন্নত করবে। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের উদ্ধৃতিতে সংস্থাগুলি জানিয়েছে, এটি দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আধুনিক করার একটি সংস্কার উদ্যোগ।
তবে সমালোচকেরা এই পদক্ষেপকে স্বৈরতন্ত্রের দিকে ধাবিত করা বলছেন। সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী মুনিজা জাহাঙ্গীর মন্তব্য করেছেন, ‘সামরিক বাহিনী ও বেসামরিকদের মধ্যে ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে, এবং সেনাবাহিনী অতিরিক্ত ক্ষমতায় সজ্জিত হয়েছে।
বিচার বিভাগ সম্পর্কেও সংশোধনী বিতর্কের মুখে। নতুন আইন অনুযায়ী ফেডারেল সাংবিধানিক আদালত (FCC) প্রতিষ্ঠা করা হবে, যার বিচারক নিযুক্ত করবেন রাষ্ট্রপতি। অনেক আইনজীবী আশঙ্কা করছেন, এটি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হ্রাস করবে। ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি পদত্যাগ করেছেন।
ওয়াশিংটনের উইলসন সেন্টারের সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান এই পরিবর্তনকে পোস্ট-হাইব্রিড শাসনের সূচনা হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং বলেন, ‘এটি ক্ষমতার ভারসাম্যহীনতার ইঙ্গিত দেয়।’
সংশোধনীর সমর্থকরা যুক্তি দেন, দেশের সমস্ত আদালতে কর্মী নিয়োগ ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পাবে। তবে বিরোধীরা বলছেন, এটি নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হতে পারে, এবং বিচার ব্যবস্থাকে রাজনৈতিক চাপের মুখে ফেলে দেবে।
পাকিস্তানের সামরিক ও বেসামরিক ব্যবস্থার ভারসাম্য, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সীমা নিয়েও নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। তথ্য সূত্র- বিবিসি বাংলা







