ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধকে সমর্থনের প্রতিবাদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন মালয়েশিয়ার জনগণ। বিক্ষোভটি এমন সময় হচ্ছে, যখন ট্রাম্প মালয়েশিয়া সফর করছেন।
রোববার (২৬ অক্টোবর) সকালে ও সন্ধ্যায় দেশটির রাজধানী কুয়ালালামপুরের ইন্ডিপেনডেন্স স্কয়ার ও অ্যাম্পাং পার্ক এলাকায় এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। শত শত মানুষ ‘ফ্রি, ফ্রি প্যালেস্টাইন’ শ্লোগানে ট্রাম্পবিরোধী সমাবেশে অংশ নেন।
পাঁচ দিনের এশিয়া সফরের প্রথমদিন কুয়ালালামপুরে আয়োজিত আসিয়ান সম্মেলনে অংশ নিতে মালয়েশিয়া পৌঁছান ট্রাম্প। এদিন তিনি কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি সই করান। তিনি নিজেও চুক্তিপত্রে সই করেন। একইসঙ্গে মালয়েশিয়ার সঙ্গে একাধিক বাণিজ্য চুক্তি ঘোষণা করেন।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ট্রাম্প বিরোধী বিক্ষোভে মালয়েশিয়ান জনগণ কেফিয়াহ পরে অংশ নেন। ইন্ডিপেনডেন্স স্কয়ারে বিক্ষোভকারীরা প্রখর রোদ উপেক্ষা করে গাজায় গণহত্যা বন্ধের আহ্বান জানান।
উত্তর-পূর্ব মালয়েশিয়ার কেলান্তান রাজ্য থেকে ৩০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ইন্ডিপেনডেন্স স্কয়ারে আসা বিক্ষোভকারী আসমা হানিম মাহমুদ বলেন, যাদের বিবেক আছে, তারা জানে ট্রাম্প একজন গণহত্যা সহায়তাকারী। তার সমর্থন না থাকলে ইসরায়েল এত শিশু ও মানুষ হত্যা করতে পারত না। এটা কোনো জটিল বিষয় নয়, এটা একেবারে স্পষ্ট।
দেশটির পুলিশ জানিয়েছে, রোববারের বিক্ষোভে ১ থেকে দেড় হাজার মানুষ অংশ নেবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। তবে উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে কম হলেও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এতে যোগ দেন।
মালয়েশিয়ার সমাজতান্ত্রিক পার্টির নেতা চু চন কাই বলেন, এটা শুধু গাজা নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সাম্রাজ্যবাদী নীতির বিরুদ্ধেও আমাদের সংহতি সমাবেশ। বিশ্বের যেকোনো জায়গায় যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনের শিকার মানুষদের সঙ্গে আমরা সংহতি জানাই।
তিনি বলেন, বিক্ষোভটি মূলত কুয়ালালামপুর কনভেনশন সেন্টারের কাছে করার পরিকল্পনা ছিল, যেখানে ট্রাম্প ও অন্যান্য বিশ্বনেতারা সম্মেলনে যোগ দেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষের বাধায় স্থান পরিবর্তন করে আয়োজকদের অ্যাম্পাং পার্কে যেতে হয়।
সন্ধ্যায় বিক্ষোভকারীরা আবারও অ্যাম্পাং পার্কে জড়ো হয়ে ট্রাম্পবিরোধী শ্লোগান দেন। চু চন কাই বলেন, আমরা শুধু বলতে চাই, যুক্তরাষ্ট্রের নীতির বিরুদ্ধে আমরা একমত নই। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে পুলিশ আমাদের প্রতি অত্যন্ত বৈরী আচরণ করেছে এবং নির্ধারিত এলাকা বন্ধ করে দিয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও হামাস চলতি মাসের শুরুর দিকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি করলেও দুই পক্ষই এখন একে অপরকে চুক্তি ভাঙার অভিযোগে দোষারোপ করছে। এই পরিস্থিতিতে মালয়েশিয়ায় ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ শুধু তার সফরের বিরুদ্ধেই নয়, বরং গাজায় চলা যুদ্ধ আর তাতে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের বিরুদ্ধেও মানুষের ক্ষোভের প্রকাশ।







