এরদোয়ানের পদত্যাগ দাবিতে তুরস্ক উত্তাল 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ::

 

ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের পর তুরস্কজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ইমামোগলু ও তার সমর্থকরা বিভিন্ন শহরের রাস্তায় নেমে সরকারবিরোধী স্লোগান দিচ্ছেন।

 

 

ইমামোগলুর মুক্তি ও প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের পদত্যাগের দাবি করছেন তারা।

 

এরদোয়ানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রেপ্তার মেয়র একরেম ইমামোগলু।

 

দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সহায়তার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। রোববার (২৩ মার্চ) অনুষ্ঠিত ভোটে ইস্তাম্বুলের এই মেয়রকে রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) ২০২৮ সালের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত করার কথা ছিল।

 

 

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, তুরস্কজুড়ে এরদোয়ান বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন হাজার হাজার জনতা। রোববার ভোরে পঞ্চম রাতের মতো ইস্তাম্বুলের সিটি হলের কাছে জনতা জড়ো হয়েছিলেন এবং তুর্কি পতাকা ওড়াতে এবং দাঙ্গা পুলিশের সারির সামনে স্লোগান দিতে দেখা গেছে তাদের।

 

এ সময় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস এবং রাবার বুলেট ছোঁড়া হয়। বিক্ষোভ ঠেকাতে বিক্ষোভকারীদের ওপর জলকামান নিক্ষেপসহ পিপার-স্প্রে ব্যবহার করতে দেখা গেছে পুলিশকে। ইতোমধ্যে বহুসংখ্যক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রোববার সিটি হলের বাইরে বিশাল জনতার উদ্দেশে ভাষণ দেন ইমামোগলুর স্ত্রী ডিলেক কায়া ইমামোগলু। বিক্ষোভকারীদের তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী যে অবিচারের সম্মুখীন হয়েছেন তা প্রতিটি বিবেকের হৃদয়ে দাগ কেটেছে। ’

 

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর মতে, একরেম ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের প্রতিক্রিয়ায় রোববার রাতে দেশটিতে এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অস্থিরতা দেখা দেয়। ২০১৩ সালের গেজি বিক্ষোভের পর থেকে দেশটিতে দেখা সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ এটি।

 

ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপির এক পরিসংখ্যান বলছে, তুরস্কের ৮১টি প্রদেশের মধ্যে অন্তত ৫৫টিতে অর্থাৎ দেশের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি স্থানে বিক্ষোভ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

 

তুরস্কের প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) একরেম ইমামোগলুর গ্রেপ্তারকে ‘অভ্যুত্থান’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। বিক্ষোভকারীরা ইমামোগলুর মুক্তির দাবিতে রাজধানী আঙ্কারা, ইস্তাম্বুল ও অন্যান্য শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ করছে। তাদের অভিযোগ, সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই গ্রেপ্তার করেছে এবং এরদোয়ানের পদত্যাগের দাবি জানান তারা।

 

জানা গেছে, বিচারের জন্য একরেম ইমামোগলুকে ইতোমধ্যে হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। এএফপি এবং স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, তাকে সিলিভ্রির একটি কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

 

এদিকে হেফাজতে নেওয়ার আগে এক এক্সবার্তায় একরেম ইমামোগলু বলেছেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলি রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমি কখনও মাথা নত করব না। ’

 

তাকে গ্রেপ্তার ‘গণতন্ত্রের ওপর কালো দাগ’ বলে সমালোচনা করে ইমামোগলু অভিযোগ করেছেন, বিচারিক প্রক্রিয়া যথাযথ অনুসরণ করা হচ্ছে না।

 

সারা দেশের জনগণকে বিক্ষোভে যোগদানের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

 

এদিকে বিক্ষোভের নিন্দা করেছেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান এবং সিএইচপিকে ‘শান্তি বিঘ্নিত করার এবং জনগণকে মেরুকরণের’ চেষ্টা করার অভিযোগ করেছেন তিনি।