ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রায় সংঘর্ষে ৮০ জনের নামে পুলিশের মামলা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক ::

 

‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রার সময় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছে পুলিশ। মামলায় অজ্ঞাতনামা ৭০-৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

 

বুধবার (১২ মার্চ) বিকেলে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম ফারুক।

 

 

 

তিনি জানান, রমনা থানার এসআই আবুল খায়ের বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় ১২ জন আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আসামিদের কাউকে এখনো গ্রেফতার করা যায়নি। অজ্ঞাতনামা পলাতকদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

 

মামলায় আসামিরা হলেন, অংঅং মারমা (২৫), সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট ইডেন মহিলা কলেজ শাখা সভাপতি সুমাইয়া শাহিনা (২৫), জবি ছাত্র ইউনিয়নের আদ্রিতা রায় (২৩), ছাত্র ফেডারেশনের আরমান (৩০), বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ঢাবি সভাপতি মেঘমল্লার বসু (২৮), বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা মহানগরের সভাপতি আল-আমিন রহমান (২৫), বাম ছাত্র সংগঠনের নেতা রিচার্ড (২৬), ছাত্র ফেডারেশনের হাসান শিকদার (২৫), বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের (ঢাবি) সীমা আক্তার (২৫), বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৌকত আরিফ (২৬), বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মাঈন আহাম্মেদ (২৪) এবং গণত্রান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহাম্মদ চৌধুরী (২৫)। এছাড়া ৭০/৮০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি।

 

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের (রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা) নিরাপত্তা ও রাস্তার যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে বিক্ষোভকারীদের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করার জন্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত এসি রমনা জোনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুরোধ করেন। এতে তারা উল্টো পুলিশের ওপর চড়াও হয়। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের অনুরোধের কোনো তোয়াক্কা না করে লাঠিসোঁটা নিয়ে পুলিশের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ব্যারিকেড অতিক্রম করার চেষ্টা করে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ডিউটিতে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের ওপর অতর্কিত হামলা করে এবং ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।

 

বিক্ষোভকারীদের হামলায় রমনা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন, পুলিশ সদস্য রায়হান, কাউছার, মো. রোহান, মো. সাইফুল ইসলাম, রাজারবাগের নারী পুলিশ সদস্য আদিবা, রুবিনা গুরুতর আহত হন।

 

 

বিক্ষোভকারীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজশে লাঠিসোটা ও ইট পাটকেলসহ বেআইনি সমাবেশ ঘটিয়ে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিয়ে দাঙ্গা সৃষ্টি করে সরকারি কর্মচারীকে গুরুত্বর আঘাত করেন। যা পেনাল কোড এর ১৪৩/১৪৭/১৪৯/১৮৬/৩৩২/৩৩৩/৩৫৩/১০৯/৩৪ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

 

এদিকে, ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান সংবাদ বিজ্ঞপ্তি জানান, ১১ মার্চ বিকেল আনুমানিক ৩টা ৩৫ মিনিটের দিকে ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রা নামে নারী-পুরুষসহ ৬০-৭০ জনের একটি বিক্ষোভকারী দল প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা অভিমুখে যাত্রার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে বাধা দেয়। এসময় ওই পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা নারীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে। কাছেই রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা ও যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরে যেতে অনুরোধ করলে তারা উল্টো পুলিশের ওপর চড়াও হয়ে মারমুখী আচরণ শুরু করেন।

 

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এসময় বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী নারীদের নখের আঁচড়ে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। একপর্যায়ে তারা পুলিশের সঙ্গে ধ্বস্তাধস্তিতে লিপ্ত হয় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের ওপর অতর্কিত ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। এসময় তাদের হামলায় রমনা জোনের সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন গুরুতর আহত হন। এছাড়া হামলাকারীদের আঘাতে রমনা ডিভিশনের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদ আলম, দুই নারী পুলিশ সদস্য এবং তিনজন পুরুষ কনস্টেবল আহত হন। পরবর্তী সময়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

সোস্যাল নেটওয়ার্ক

সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত