খালেদা জিয়াকে দেখতে লন্ডন যেতে চেয়েছিলেন বাবা: সাঈদ নোমান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চট্টগ্রাম :: 

 

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নোমানের ছেলে সাঈদ আল নোমান বলেছেন, বাবা হারানোর কষ্ট সবার একই। কিন্তু তিনি শুধু বাবা ছিলেন না।

 

 

আবদুল্লাহ আল নোমান একটি প্রতিষ্ঠানের নাম, তাকে শুধু বাবা বলে নিচে নামিয়ে আনতে চাই না। এই মানুষটা পুরোদস্তুর একজন রাজনীতিবিদ।

রাজনীতি নিয়ে তার ধ্যান, জ্ঞান, মন সবকিছু। সাত দিন আগে বললেন আমি ম্যাডাম এবং জনাব তারেক রহমানকে দেখতে যাব।

 

আমরা পাসপোর্টটা করতে দিলাম চার দিন আগে। আমাকে বললেন, তুমি প্রস্তুতি নাও, তুমিসহ যাব।

 

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ধানমন্ডির বাসায় সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন সাঈদ আল নোমান।

 

বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নোমান একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় করেছেন জানিয়ে সাঈদ আল নোমান বলেন, তিনি বিশ্ববিদ্যালয় করেছেন একাধিক। ভেটেরিনারি ইউনিভার্সিটি করেছেন। আমি যে বিশ্ববিদ্যালয়টি করেছি, ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়, সেটার চিফ পেট্রন বাবা। তিনি না থাকলে আমি থাকতাম না। এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কোথায় থাকতো। তিনি চট্টগ্রামের তৃতীয় সেতুর মূল আর্কিটেক্ট। আজ থেকে ১৬ বছর আগে যদি তৃতীয় সেতু না হতো, চট্টগ্রামের উত্তর আর দক্ষিণ কোথায় যেত? এই ১৬ বছরে মানুষ কীভাবে কানেক্টেড থাকতো আমরা জানি না। চট্টগ্রামের জামিয়তুল ফালাহ কমপ্লেক্স, শিক্ষা বোর্ড ও চট্টগ্রামের প্রতিটি উন্নয়নে একটি নাম যদি কোনো না কোনোভাবে জড়িত বা সম্পৃক্ত থাকে তাহলে সেটি আব্দুল্লাহ আল নোমান। সেই কারণে তাকে প্রতিষ্ঠান বললাম।

 

তিনি বলেন, আমি ম্যাডামকে বলেছিলাম ২০০৬ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রামে যা যা করে দিয়েছেন, আমার বাবা প্রস্তাব করেছিলেন ১৬ দফা, বাণিজ্যিক রাজধানী করবার জন্য। এই সব কিছু ম্যাডাম করে দিয়েছিলেন। ২০০৬ সালের পরে এমন কিছু গণমুখী কাজ মানুষের জন্য, দেশপ্রেম নিয়ে মানুষকে ভালোবেসে এমন কাজ দেখিনি। আমি সৌভাগ্যক্রমে তাঁর সন্তান। তিনি আমার কাছে শুধু বাবা নন, অনেক ঊর্ধ্বে। ব্যক্তি আবদুল্লাহ আল নোমান, রাজনীতিবিদ আবদুল্লাহ আল নোমান, মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান, যা-ই বলি বাবা আবদুল্লাহ আল নোমান অনেক অনেক ঊর্ধ্বে।

 

আবদুল্লাহ আল নোমান মঙ্গলবার সকাল ৬টায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ১ ছেলে ও ১ মেয়ে রেখে গেছেন।

 

বাদে জোহর ধানমন্ডি ঈদগাহ মসজিদে মরহুমের প্রথম জানাজা, বেলা আড়াইটায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় দ্বিতীয় জানাজা এবং নয়াপল্টনের বিএনপি কার্যালয়ের সামনে বাদে আসর তৃতীয় জানাজা হয়েছে। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় মরহুমের মরদেহ চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ির নাসিমন ভবনের বিএনপি দলীয় কার্যালয়ে নেওয়া হবে, বাদে জুমা জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ মাঠ এবং বাদে আসর রাউজান গহিরা হাইস্কুল মাঠে জানাজা হবে। এরপর রাউজানের গহিরায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

 

আবদুল্লাহ আল নোমান ১৯৯১ সালে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থেকে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী এবং ২০০১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর খাদ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।