হাতে বিয়ের মেহেদি জ্বলজ্বল করছে। মাত্র দুই দিন আগে গত শুক্রবার রায়হানের সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন সানজিদা। কিন্তু রোববার এক সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছে রায়হানের প্রাণ। রোববার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ইমার্জেন্সি সেন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে হাউমাউ করে কাঁদছিলেন সানজিদা। কে জানত, দুই দিনের ব্যবধানে স্বামীর লাশের সামনে দাঁড়াতে হবে তাকে।
গতকাল সন্ধ্যা ছয়টার দিকে চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটের ডিসি পার্কের সামনে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন সানজিদার স্বামী রায়হান উদ্দিন। সন্ধ্যা সাতটার দিকে রায়হান উদ্দিনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ জানায়, সন্ধ্যা সাতটার দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রায়হান উদ্দিনকে মেডিকেলে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
নিহত রায়হান নগরের পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী। তিনি লেখাপড়া শেষ করে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। তার মৃত্যুর খবর শুনে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও সহপাঠীরা। এ সময় তার সতীর্থরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
রাত আটটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ইমার্জেন্সি সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, শোকে কাতর সানজিদা বিলাপ করছিলেন। কেবল বলছিলেন, ‘আল্লাহ কেন এমন করল।’ তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন স্বজন ও বন্ধুরা।
মেডিকেলের ইমার্জেন্সির সামনে তখনো অর্ধশতাধিক মানুষের ভিড়। তারা সবাই নিহত রায়হানের স্বজন, শিক্ষক, বন্ধু-ভাই। তার বন্ধু পার্থ প্রতিম নন্দী বলেন, ‘ওর ক্রীড়া সাংবাদিক হওয়ার অনেক বড় স্বপ্ন ছিল। প্রায়ই খেলা নিয়ে আমাদের মধ্যে কথা হতো। সে আমাকে সব সময় বলত “একদিন আমি স্পোর্টস সাংবাদিক হব।”’
রায়হানের আরেক বন্ধু তাপস বড়ুয়া বলেন, ‘শুক্রবার তার বিয়েতে যেতে পারিনি। সেদিন রাতেও অনেক হাসিখুশি ছিল। কথা হলো তার সঙ্গে। আজ সে নেই।’