‘সকালে ভালো থাকলেও রাতে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন খালেদা জিয়া’

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘ভালো নেই বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। সকালে কিছু ভালো থাকলেও রাতে আবার অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।’- আজ সোমবার এমনটাই জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত স্টাফরা। এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত এক চিকিৎসক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সার্বক্ষণিক তার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। বিকেলে একজন চিকিৎসক যাচ্ছেন। রাতে আবার অন্য চিকিৎসকরা যাচ্ছেন। সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ে রাখা হচ্ছে।

খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বিকেলে বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে বাসায় নেওয়ার পর মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা সার্বক্ষণিক চেয়ারপারসনকে পর্যবেক্ষণে রাখছেন। নিয়মিত চেকআপ করছেন।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা ভালো যাচ্ছে না। সকালে কিছু ভালো থাকলে রাতে অবস্থার অবনতি হচ্ছে। এ কারণে বিগত কয়েকমাসে তাকে একাধিকবার হাসপাতালে নিতে হয়েছে। এ কারণে ড্রাইভার, চিকিৎসকসহ ব্যক্তিগত স্টাফদের ২৪ ঘণ্টা অ্যালার্ট থাকতে বলা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খালেদা জিয়ার এক ব্যক্তিগত চিকিৎসক বলেন, ‘লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার দ্রুত লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট দরকার। এটি না করাতে ইদানিং তার ফুসফুসে পানি জমছে। এই পানি বের করতে হাসপাতালে নিতে হচ্ছে। তাছাড়া লিভারে পানি জমার পাশাপাশি শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। তখন তাকে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে।’

মেডিকেল টিমের পরামর্শে গত বুধবার রাতে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসনকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। রাতে তাকে হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রাখা হয়। কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে পরেরদিন রাতে আবার তাকে বাসায় ফিরিয়ে নেওয়া হয়। গভীর রাতে ডা. জাহিদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘লিভারের মারাত্মক জটিলতায় রয়েছে খালেদা জিয়ার। উনার স্থায়ী চিকিৎসা দরকার। এটি করতে পারলে তিনি দীর্ঘ সময় ভালো থাকতে পারবেন। মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা বলেছেন উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে নিতে হবে। লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে।’

এর আগে গত ৩১ মার্চ হটাৎ শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাত আড়াইটায় জরুরিভাবে হাসপাতালে নেওয়া হয়। রাতে হাসপাতালে নেওয়ার পরপরই কয়েকটি টেস্ট করা হয়। মেডিক্যাল বোর্ড পরীক্ষাসমূহ দেখে চিকিৎসার ওষুধপত্র প্রদান করেন। পরে সিসিইউতে ভর্তি করানো হয়। ২ এপ্রিল রাতে বাসায় নেয়া হয় তাকে। দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির চেয়ারপারসন ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দি ছিলেন তিনি।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাজা ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছিল। তখন থেকে ছয় মাস পরপর তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।

সোস্যাল নেটওয়ার্ক

সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত