লাশ টুকরো করার যে বর্ণনা দিয়েছে ‘কসাই’ জিহাদ জিহাদ বাংলাদেশি নাগরিক

নিজস্ব প্রতিবেদক

  • জিহাদ বাংলাদেশি নাগরিক
  • হত্যার পরিকল্পনা হয় গুলশান ও ধানমন্ডির দুটি বাসায়
  • ২৫ এপ্রিল জিহাদ এবং সিয়াম কলকাতার সঞ্জীভা গার্ডেনে বাসা ভাড়া করে

 

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমকে (আনার) হত্যার পর যে “কসাই” তার দেহ টুকরো টুকরো করেছিল বলে অভিযোগ, তাকে গ্রেপ্তার করেছে পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি। জিহাদ হাওলাদার নামে ওই ব্যক্তি বাংলাদেশি নাগরিক। তিনি অবৈধভাবে ভারতের মুম্বাইয়ে বসবাস করে আসছিলেন।

শুক্রবার (২৪ মে) বারাসাত আদালতে তোলা হবে তাকে। পশ্চিমবঙ্গের সিআইডির এক শীর্ষ কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছেন।

হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক আখতারুজ্জামান দুই মাস আগে জিহাদকে কলকাতায় নিয়ে যান। নিহত এমপির মরদেহের খোঁজে বৃহস্পতিবার তাকে (জিহাদ) আটক করে জেরা করা হয়।

সিআইডির জেরায় জিহাদ স্বীকার করেছেন যে, আখতারুজ্জামানের নির্দেশে ওই ফ্ল্যাটে তিনি এবং আরও চারজন বাংলাদেশি মিলে আনারকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন।

সিআইডির ওই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, “হত্যার পর মৃতদেহ থেকে চামড়া ছাড়িয়ে শরীরে মাংস আলাদা করে নেয় তারা। শরীরের মাংস এমনভাবে টুকরো করা হয় যাতে তাকে চেনা না যায়। মাংস-খণ্ডগুলো পলি প্যাকেটে ভরা হয়। হাড়ও ছোট টুকরো করা হয়। এরপর ফ্ল্যাট থেকে প্যাকেটগুলো বের করে কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেওয়া হয়।”

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বৃহস্পতিবার দুপুরে মিন্টো রোডে তার কার্যালয়ে এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা কোথায়, কখন, কীভাবে ও কারা সংঘটিত করেছে তার বিস্তারিত বর্ণনা দেন তিনি।

হারুন অর রশীদ বলেন, “ঢাকার গুলশান ও ধানমন্ডির দুটি বাসায় এক-দুই মাস ধরে সংসদ সদস্য। আনোয়ারুল আজীমকে হত্যার পরিকল্পনা হয়। ঢাকায় ধরা পড়ার সম্ভাবনা থাকায় হত্যার স্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয় কলকাতাকে।”

এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, “আনোয়ারুলকে হত্যার পর লাশটি গুম করতে শরীর টুকরা টুকরা করে হাড্ডি ও মাংস আলাদা করা হয়। এরপর কেউ যাতে সন্দেহ করতে না পারে, এ জন্য হলুদ মিশিয়ে ব্যাগে ভরে ওই বাসা থেকে বের করা হয়। কিন্তু কোথায় মরদেহের খণ্ডিত অংশ ফেলা হয়েছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।”

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ জানান, এ হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড আখতারুজ্জামান বা শাহীন আনোয়ারুল আজীমের বাল্যবন্ধু। ২৫ এপ্রিল জিহাদ অথবা জাহিদ এবং সিয়াম কলকাতার সঞ্জীভা গার্ডেনে বাসা ভাড়া করেন। এজন্য ৩০ এপ্রিল ঘটনার মাস্টারমাইন্ড কলকাতায় যায়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আনোয়ারুল আজীম ১২ মে কলকাতায় গিয়ে বন্ধু গোপালের বাসায় ওঠেন। পরদিন হত্যাকাণ্ড যারা ঘটায় তাদের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। ১৩ মে প্রথমে ফয়সাল নামের এক ব্যক্তি সাদা গাড়িতে তাকে রিসিভ করেন। তাদের সঙ্গে ছিলেন রাজা নামের এক ইন্ডিয়ান ড্রাইভার। সে (রাজা) আসলে কিছুই জানে না, সে ছিল ক্যারিয়ার। সে তাদেরকে নিয়ে ওই বাসায় যায়। ওই বাসায় যাওয়ার পরই মোস্তাফিজ নামে আরেকজন ঢুকে। জিহাদ ও সিয়াম আগেই ওই বাসায় ছিল।

সোস্যাল নেটওয়ার্ক

সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত