মেট্রোরেলে গতকাল নারী বগিতে কয়েকজন পুরুষ উঠে পরায় সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। কেউ কেউ সেদিনের ছবি পোস্ট করে পরবর্তীতে না উঠার অনুরোধ করেছেন। কেউ আবার ভিডিও পোস্ট করে বিষোদগার করেছেন। আবার অনেকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে মেট্রোরেলে নারীদের জন্য সংরক্ষিত বগিতে অনেক পুরুষই উঠেছেন বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন।
ফেসবুকের একটি কমিউনিটি গ্রুপে নুশরাত জাহান নামের এক মেট্রো যাত্রী লিখেছেন, ‘ভাইয়ারা যারা আছেন, একান্তই অসুস্থ কেউ সাথে না থাকলে বউ কিংবা বান্ধবীকে নিয়ে মহিলা বগিতে উঠবেন না। আপনাদের গা ঘেঁষে দাঁড়াতে আপনাদের বান্ধবীদের ভালো লাগলেও অন্যদের লাগে না।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আপনি স্টুডেন্ট হন কিংবা কর্মজীবী। মনে মনে নিজেকে মেয়ে মনে করলেও আপনি ছেলেই। তাই ভাইয়ারা এই কাজ করবেন না। আমাদের কষ্ট হয়।’
‘শরীফ-শরীফা’ বাতিল দাবিতে পথে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের একাংশ‘শরীফ-শরীফা’ বাতিল দাবিতে পথে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের একাংশ
শুভ বড়ুয়া লিখেছেন, ‘নেক্সট টাইম শরীফা শরীফা করে ধুয়ে দেবেন সবাই মিলে। শিক্ষা হয়ে যাবে। আরে বেটা এতো সামনের বগিতে গিয়ে কে উঠে? এরা ইচ্ছা করেই এগুলা করে।’
জান্নাতুল ফিরদাউস নামে একজন লিখেছেন, ‘পুরুষ মহিলা বগিতে উঠে, এটা পারিবারিক শিক্ষার একটা জঘন্য প্রতিফলন।’
এখানে রায়হান খান কমেন্ট করেছেন, ‘অনেকে না জেনে ভুল করেও তো উঠতে পারে। অনেকেই আছেন নতুন মেট্রোরেলে ভ্রমণ করে।’
নারীদের বগিতে পুরুষদের গাদাগাদির একটি ভিডিও শেয়ার করে রেভিতা রুবু লিখেছেন, ‘এই হলো মহিলা বগির অবস্থা। এমআরটি পুলিশ কোনো কথা বলে না।’
তরিকুল ইসলাম লিখেছেন ‘আমার মনে হচ্ছে এটা একটা ভয়ংকর দৃশ্য।’ হাসান তানজির লিখেছেন, ‘এরা ট্রান্সজেন্ডার, বিশ্বাস না হলে কথা বলে দেখেন।’
আরেকটি ভিডিও পোস্ট করে জিন্নাত তামান্না লিখেছেন, ‘আজকে সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে ফার্মগেট থেকে উত্তরা উত্তরমুখী ট্রেনে উঠার পর মহিলা কোচে ৪-৫ জন পুরুষকে দেখি। উনারা দাঁড়িয়ে আছেন। প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যে যেখানে মহিলাদের দাঁড়াতে কষ্ট হচ্ছিল সেখানে উনারা বেশ খানিক জায়গা দখল করে রেখেছিলেন। পরবর্তী স্টেশনে দুইজন মহিলা উঠতে চেয়েও জায়গার স্বল্পতার কারণে উঠতে পারেনি।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘কয়েকজন মহিলা বারবার বলার পরও উনারা সেদিকে কোনো কর্ণপাতই করলেন না। এমনকি স্টেশনে কর্মরত পুলিশ বলার পরও উনারা কোচ চেঞ্জ করেননি। মেট্রোরেলের একজন রেগুলার যাত্রী হিসেবে প্রায়দিনই এমন পরিস্থিতির স্বীকার হতে হয়। কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যারা এমন কাজ করেন তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত কোন ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’
আরেকটি ভিডিও পোস্ট করে সিলভি সালেহিন লিখেছেন, ‘মেট্রোর মহিলাদের বগিতে একপ্রকার জোরপূর্বক পুরুষ উঠে পড়েন। মহিলাদের নির্দিষ্ট কিছুই কি নেই এই বাংলাদেশে? উনাদের বারবার বলা হয়েছে যে আপনারা নেমে পড়েন অথবা পাশের বগিতে চলে যান। মানুষ কত নির্লজ্জ হলে তারা মহিলাদের সাথে মহিলাদের বগিতে মেট্রো ভ্রমণ করে।’
মেট্রোরেলে নারীদের নির্বিঘ্ন চলাচলে প্রতিটি ট্রেনে রাখা হয়েছে আলাদা বগি বা কোচ। তবে চাইলে তারা অন্য কোচেও যাতায়াত করতে পারবেন। স্টেশনগুলোতে নারীদের জন্য আছে পৃথক টয়লেটের ব্যবস্থা। সেখানে শিশুদের ডায়াপার পরিবর্তনের বিশেষ ব্যবস্থাও আছে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড জানিয়েছে, নারীদের বগিতে কোনো পুরুষরা উঠতে পারবেন না। সহযাত্রীদের অস্বস্তি বা অসুবিধা তৈরি করা যাবে না।