ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে সোমবার ওই প্রস্তাব পাস হয়। এ প্রস্তাবে অবিলম্বে ও নিঃশর্তে হামাসের হাতে জিম্মিদের মুক্তিরও আহ্বান জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভেটো না দেয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ওপর বেজায় চটেছে ইসরায়েল। ওয়াশিংটনে একটি বৈঠকও বাতিল করেছে তারা।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে সোমবার ওই প্রস্তাব পাস হয়। এ প্রস্তাবে অবিলম্বে ও নিঃশর্তে হামাসের হাতে জিম্মিদের মুক্তিরও আহ্বান জানানো হয়েছে।
আল জাজিরা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র অবস্থান পাল্টে এতে ভেটো দেয়নি। বাকি ১৪ সদস্য প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে।
এ ঘটনার পর পরই বেশ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি জানান, ইসরায়েলের একটি প্রতিনিধিদলের পূর্বনির্ধারিত যুক্তরাষ্ট্র সফর বাতিল করা হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তার আগের নীতি ত্যাগ করার অভিযোগ এনেছেন। তার কার্যালয়ের দেয়ার এক বিৃবতিতে বলা হয়, নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া প্রস্তাব হামাসকে আশা দিচ্ছে যে, আন্তর্জাতিক চাপ ইসরায়েলের জিম্মি নাগরিকদের মুক্তি না দিয়ে তাদের যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে বাধ্য করবে। এতে জিম্মিদের মুক্তির প্রচেষ্টা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
নিরাপত্তা পরিষদের পাস হওয়া প্রস্তাব মূলত আন্তর্জাতিক আইন। জাতিসংঘের সব সদস্য রাষ্ট্রের জন্য এ আইন বাধ্যতামূলক হিসেবে দেখা হয়।
আল জাজিরার কূটনৈতিক সম্পাদক জেমস বেস বলেছেন, এটি ‘খুব, খুব গুরুত্বপূর্ণ’ উন্নয়ন। প্রায় ছয় মাস পর … ভোট, প্রায় সর্বসম্মতিক্রমে। গাজায় একটি স্থায়ী এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি করেছে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তিনবার ভেটো দিয়েছে, তবে এবার এটি পাস করতে দিয়েছে।
ইসরায়েলে ঢুকে হামাস গত ৭ অক্টোবর আকস্মিক হামলা চালায়। ওই হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় টানা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। হামলা শুরুর পর ৯ অক্টোবর গাজায় সর্বাত্মক অবরোধের ঘোষণা দেয় দেশটি।
এ অবস্থায় গাজায় জিম্মি ব্যক্তিদের মুক্তি ও ইরসায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিনিময়ে ও গাজায় মানবিক সহায়তায় পাঠানোর শর্তে গত ২৪ নভেম্বর প্রথম দফার যুদ্ধবিরতি শুরু হয়।
এরপর এই যুদ্ধবিরতি চলে সাত দিন। এই সাত দিনে হামাস ১১০ জনকে এবং ইসরায়েল মুক্তি দিয়েছে ২৪০ জনকে। তবে আন্তর্জাতিক নানা মহলের চেষ্টা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত এই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আর বাড়েনি।
হামলার সময় প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল। ইসরায়েল বলছে, গাজায় এখনো অনেক জিম্মি রয়েছে। এ ছাড়া ইসরায়েল নির্বিচারে বিমান হামলা ও স্থল অভিযান চালিয়ে গাজায় ৩২ হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে। এদের প্রায় ৭০ শতাংশ নারী ও শিশু।