শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটি গেইট-৪ রপ্তানিমুখী কনটেইনার স্ক্যানারের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার আগ্রহ দেখাচ্ছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করাটাকে নিরাপদ মনে করছে। তারা বুঝে গেছে, এখানে বিনিয়োগ করলে একটা পজিটিভ রেজাল্ট পাবে।’
শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটি গেট-৪ রপ্তানিমুখী কনটেইনার স্ক্যানারের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কাজগুলো করছি দেশের ও জনগণের স্বার্থে। অতীতে আমরা কারো সাথে দেশ বিক্রির চুক্তি করিনি, আগামীতেও করবো না। শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকার। তিনি সেভাবেই দেশ পরিচালনা করছেন।’
বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আর প্রশ্ন উঠার সুযোগ নেই উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যারা এতদিন ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা করার পাঁয়তারা করতেন, আজ থেকে তাদের সে দরজা বন্ধ হয়ে গেল। সবচেয়ে বড় কথা, এই দুটি স্ক্যানার মেশিন বসিয়ে আমরা ইন্টারন্যাশনাল শিপ অ্যান্ড পোর্ট ফ্যাসিলিটি সিকিউরিটি (আইএসপিএস) এর শর্ত পূরণ করতে পেরেছি। বিশ্বব্যাপী আমাদের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হবে। আগে আমরা আমদানি পণ্য স্ক্যানিং করতে পারতাম।
এখন আমরা অত্যন্ত সুষ্ঠভাবে রপ্তানি পণ্য স্ক্যানিং করতে পারব।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সব সময় জানতে চেয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দরে স্ক্যানার মেশিন বসানো হয়েছে কিনা। তিনি এখন জার্মানি আছেন। আমার বিশ্বাস আজ দুটি স্ক্যানার মেশিন বসানোর খবর শুনে তিনি খুশিই হবেন।’
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বন্দরের সঙ্গে কাস্টমসের বোঝাপড়ার সমস্যা ছিল।
গত কয়েক বছরে এ সমস্যার সমাধান হয়েছে। এখন বন্দর কাস্টমস যৌথভাবে দেশকে এগিয়ে নিতে, দেশের অর্থনীতিকে সম্বৃদ্ধ করতে কাজ করে যাচ্ছে। বন্দর নিয়ে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ হলে আমরা দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যাই। কাজেই আমাদেরকে এগিয়ে যাওয়ার জন্যই কাজ করতে হবে যাতে কোনো প্রশ্ন কেউ তুলতে না পারে।’
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘স্ক্যানার মেশিনগুলো কেনা, বসানো এত সহজ ছিল না। আজ সেটি বাস্তব। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এটি সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করবে আমার বিশ্বাস। রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেইনার আইসিডিতে স্ক্যান হয়ে বন্দরে আসার নিয়ম রয়েছে। আজ কাস্টমস কমিশনারের মাধ্যমে জানতে পারলাম, সে নিয়ম এখন শিথিল রয়েছে। তবে বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আজ থেকে জোরদার হলো।’
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর প্রথম শ্রেণির কেপিআই। বিশ্বের ১০০ শীর্ষ বন্দরে আমরা ৬৭তম। প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা ও নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে বন্দর এগিয়ে চলছে। প্রথমবারের মতো আধুনিক স্ক্যানার স্থাপন করেছি। বন্দরের পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল-পিসিটিতে সৌদিভিত্তিক রেড সি গেটওয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। বে টার্মিনালের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। স্ক্যানার দুইটি কাস্টম হাউস অপারেট করবে। এর ফলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে রপ্তানি কনটেইনার জাহাজীকরণ সম্ভব হবে। বন্দরের নিরাপত্তা ও ভাবমূর্তি বাড়বে। দেশ এগিয়ে যাবে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লে. কর্নেল মোস্তফা আরিফুর রহমান খান, এরিয়া কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল আজিম, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার ফাইজুর রহমান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, মেট্রোপলিটন চেম্বার সভাপতি খলিলুর রহমান, বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক, ফাইভ আর অ্যাসোসিয়েটসের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট রায়ান জাহিদ রহমান, বন্দর সিবিএ নেতা নায়েবুর রহমান ফটিকসহ চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকর্তা কর্মচারি, বন্দর ব্যবহারকারী, স্ক্যানার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।