বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ফিরিয়ে দিলেন কথাসাহিত্যিক জাকির তালুকদার। রবিবার ( ২৮ জানুয়ারি) নিজের ভেরিফাইয়েড ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পোস্টে জাকির তালুকদার লিখেছেন, ‘পাঠিয়ে দিলাম। খুব ভারমুক্ত লাগছে।’ সঙ্গে পুরস্কার ফেরত দেওয়ার আবেদন ফর্মের একটি ছবি এবং একটি চেকের পাতা সংযুক্ত করেছেন জাকির তালুকদার।
তিনি ২০১৪ সালে বাংলা একাডেমি থেকে এ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন। দশ বছর পর তিনি এটি ফেরত দিলেন। তবে কি করণে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা তিনি পরে প্রকাশ করবেন বলে কমেন্টে জানিয়েছেন। তার এমন স্ট্যাটাসে হতবাক হয়েছেন নেটিজেনরা। তার পোস্টে অনেকে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
তার ফেসবুক পোস্টে আযাদ কালাম নামের একজন কমেন্ট করে বলেছেন, বদরুদ্দীন উমর বাংলা একাডেমিসহ কোনো পুরস্কারই গ্রহণ করেননি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের (তখন তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক) চাকুরিটাও স্বেচ্ছায় ত্যাগ করেছিলেন সরকারের বিরোধিতা করতেন বলে।
অভিনেত্রী শ্রীলা মজুমদার মারা গেছেনঅভিনেত্রী শ্রীলা মজুমদার মারা গেছেন
বাংলা একাডেমি পুরস্কার পাবার আগেই ব্যক্তিগতভাবে জাকির তালুকদার আমাকে বলেছিলেন, বাংলা একাডেমি পেলে তিনি গ্রহণ করবেন না। কিন্তু গ্রহণ করেছিলেন। এর পক্ষে জাকির কিছু যুক্তিও দেখিয়েছিলেন, যা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। জানি না ফেরৎ দেয়ার জন্য তিনি কী ব্যাখ্যা দেন।
আমরা যারা ‘বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রাপ্ত জাকির তালুকদার’ বলার জন্য বা লেখার জন্য পাগল থাকি তাদের জন্য খুব মায়া লাগছে। পুরস্কারবিহীন জাকির তালুকদারের কি মূল্য আছে তাদের কাছে?
রাজু আলাউদ্দিন নামের আরেকজন কমেন্টে বলেছেন ‘ পুরষ্কার ফেরত দেওয়ায় খুশি হলাম। কিন্তু কারণটা বললে ভালো হতো। অভিনন্দন, প্রিয় জাকির। এই সাহসটা একমাত্র আপনিই দেখলেন।’ এছাড়াও অনেকে এই সিদ্ধান্তে লেখক জাকির তালুকদারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
জাকির তালুকদারের লেখায় ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে পুরাণের সংমিশ্রণ সম্পূর্ণ ভিন্ন এক মাত্রা নিয়ে উপস্থিত হয়েছে। তার মহাকাব্যিক উপন্যাস ‘পিতৃগণ’ সমকালীন কথাসাহিত্যে একটি মৌলিক সংযোজন। ‘পিতৃগণ’ ছাড়া কুরসিনামা, মুসলমানমঙ্গল, কবি ও কামিনী, ছায়াবাস্তব, কল্পনা চাকমা ও রাজার সেপাই তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ।
জাকির তালুকদার বেড়ে উঠেছেন নাটোরে। তিনি চিকিৎসাবিজ্ঞানে স্নাতক এবং স্বাস্থ্যঅর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। কর্মজীবনে তিনি একজন চিকিৎসক। বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসা ও গবেষণা বিভাগে কাজ করছেন।