বিনিয়োগ এবং বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানিতে আগ্রহী সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যবসায়ীরা। এক্ষেত্রে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যবসায়ীদের সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুবাই চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট ও সিইও মোহাম্মদ আলী লোথা এবং এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলমের মধ্যে এক বৈঠক হয়।
এ বিষয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু দেশের মধ্যে একটি। দীর্ঘদিন ধরে দুই দেশ অসাধারণ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে এসেছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন অন্যতম সহযোগী হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাত সব সময় বাংলাদেশের পাশে থেকেছে। আমাদের কয়েক লাখ রেমিট্যান্স যোদ্ধা ভাই-বোন সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে রেমিট্যান্স প্রেরণের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির ভীত মজবুত করতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য সরকারের গৃহীত নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশে অনেক সম্ভাবনাময় খাত রয়েছে। এ খাতগুলোতে বিনিয়োগ করে লাভবান হতে পারেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যবসায়ীরা। বর্তমান সরকার ব্যবসার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের জন্য ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইপিজেড) স্থাপন, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্ণফুলী টানেল, পদ্মাসেতু নির্মাণসহ দেশে ব্যাপকভাবে অবকাঠামোগত উন্নয়ন সম্পন্ন করেছে। এসময় বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের জন্য ইউএই’র ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি।
বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে এরই মধ্যে জাপান, ভারত ও কোরিয়া বিনিয়োগ করেছে উল্লেখ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যবসায়ীদের এখানে বিনিয়োগের প্রস্তাব দেন এফবিসিসিআই সভাপতি। তিনি সরকারের ভিশন-২০৪১ সহ বিনিয়োগের সম্ভাব্য খাতগুলো তুলে ধরেন।
মাহবুবুল আলম আরও বলেন, চট্টগ্রাম, পায়রা ও মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দরে ব্যাপক বিনিয়োগের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা চাইলে এ সুবিধা নিতে পারেন।
বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে ইউএই’র কোম্পানিগুলোকে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প, সিরামিক, চামড়াজাত পণ্য এবং পাট ও পাটজাত পণ্যের সুনাম বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। এই খাতগুলোতে বিনিয়োগের মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যবসায়ীরা দারুণভাবে লাভবান হতে পারেন।
এসময় বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি জনবল নেওয়ার জন্য আরব আমিরাতের প্রতি আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি। বাংলাদেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে দক্ষ জনবল পাঠাতে আগ্রহী বলেও জানান তিনি।
দুবাই চেম্বারের সভাপতি বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ নিয়ে অনেক আগ্রহী। তারা দীর্ঘদিন ধরে বিনিয়োগের কথা ভাবছেন। বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে দুবাই চেম্বারের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে একটি দল গঠন করা হয়েছে।
এসময় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের দুবাইয়ে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন দুবাই চেম্বারের প্রেসিডেন্ট। বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি নেওয়ার বিষয়ে নিজেদের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন মোহাম্মদ আলী লোথা।
বৈঠকে এফবিসিসিআই পরিচালক মোহাম্মদ ফাইজুর রহমান, ফখরুস সালেহীন নাহিয়ান, আবুধাবি দূতাবাসের মিশন উপপ্রধান মিজানুর রহমান ও দুবাইয়ে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর আশীষ কুমার, সংযুক্ত আরব আমিরাতের গ্লোবাল মার্কেটসের ভাইস প্রেসিডেন্ট সালেম আল শামসি, ডিরেক্টর স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ অ্যান্ড প্রটোকল অফিসার সুমায়া আল শামসি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।