প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এম নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেছেন বাংলাদেশি অভিবাসীদের আমিরাতে চাকরির ব্যবস্থা আছে কি না তা নিশ্চিত হওয়ার পর দেশটি এখান থেকে জনশক্তি নেবে।’
উপসাগরীয় দেশগুলোতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের চাকরি নিশ্চিত হওয়ার পরই কেবল ভিসা ইস্যু করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আলী আবদুল্লাহ খাসেফ আল-হুমুদি ।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানান তিনি। সূত্র: ইউএনবি।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এম নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেছেন যে তাদের জন্য ইতোমধ্যে দেশটিতে চাকরির ব্যবস্থা আছে কি না নিশ্চিত হওয়ার পর তারা বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নেবে।’
অবৈধ অভিবাসীদের বাংলাদেশ থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবেশ করতে না দেয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূত একমত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
নাইমুল ইসলাম বলেন, ‘উভয় দেশ এ বিষয়ে আরও সচেতন হওয়ার বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে।’
রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীকে জানান, বিনিয়োগসহ বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করার নতুন পথ খুঁজে বের করতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী শিগগিরই ঢাকা সফর করবেন।
সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ‘আমাদের মধ্যে অত্যন্ত বিস্তৃত ও গভীর সম্পর্ক রয়েছে। আমরা এটিকে আরও নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে আগ্রহী।’
‘বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে প্রতি মাসে প্রায় ২০ হাজার অভিবাসী সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাচ্ছেন। আমিরাত দূতাবাস প্রতিদিন প্রায় এক হাজার ভিসা ইস্যু করছে, যার মধ্যে ৫০০ জন সরাসরি এবং পাঁচশ’ জন এজেন্টের মাধ্যমে।’
বিনিয়োগের বিষয়ে আলোচনাকালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের প্রস্তাব দেন প্রধানমন্ত্রী।
কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণসহ বাংলাদেশে আমিরাতের বিনিয়োগ ত্বরান্বিত করতে প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন দেশটির রাষ্ট্রদূত।
প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রদূতকে বলেন, ‘সব সেক্টরে সার্বিক গতি বাড়াতে কাজ করছে সরকার। আমরা প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত করার জন্য সবকিছু করছি।’
‘সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি কোম্পানি বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচলকে অ্যাডভান্স প্যাসেঞ্জার ইনফরমেশন সিস্টেম (এপিআইএস) সরবরাহের প্রস্তাব দিয়েছে। মূল্য নিয়ে আলোচনায় প্রক্রিয়াটি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনের কাছে পাঠিয়েছেন বলে জানান প্রেস সচিব।
নিরাপত্তার কারণে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলো এবং অন্যান্য দেশ এখন এয়ারলাইন্সগুলোকে ভ্রমণের আগে তাদের যাত্রীদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিতে বাধ্য করে। এটি অ্যাডভান্স প্যাসেঞ্জার ইনফরমেশন (এপিআই) নামে পরিচিত।
এপিআই সিস্টেম যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ও সীমান্ত সুরক্ষা (সিবিপি) দ্বারা প্রতিষ্ঠিত একটি বৈদ্যুতিক ডেটা ইন্টারচেঞ্জ সিস্টেম।
২০০৯ সালের মে থেকে শুরু করে বেসরকারি বিমান পাইলটদেরও সিবিপিকে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করতে হয়। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ১৮০ দিনের ‘স্বেচ্ছায় সম্মতির সময়কাল’ সহ এই নীতিমালা কার্যকর করা হয়েছিল।
সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রীকে আমিরাত সফরের আমন্ত্রণ জানান রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম তাকে স্বাগত জানাতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।’