বলিউডের জনপ্রিয় কমেডিয়ান জনি লিভার অর্থ-কষ্টে বেড়ে উঠেছেন। বলা যায়— সংগ্রামী এক জীবন পার করে বর্তমান অবস্থান তৈরি করেছেন এই অভিনেতা। এর চেয়েও বড় বিষয় হলো, পর্দায় লোক হাসানো মানুষটি আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন।
রণবীর আল্লাহবাদিয়াকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন জনি লিভার। এ আলাপচারিতায় আত্মহত্যার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার বয়স যখন ১৩ বছর, তখন পাশের রেললাইনে গিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করি। রেললাইনে মাথা দিয়ে রেখেছি, ট্রেন অনেকটা কাছাকাছি চলে আসছে। এমন সময়ে আমার তিন বোন চোখের সামনে চলে আসে। তারা আমাকে বলে, এটা তুমি কি করতেছো? এটা পাপ। তারপর কীভাবে নিজেকে সরিয়ে নেই, তা আমি বলতে পারব না।’
ম্যাশেবল ইন্ডিয়াকে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন জনি লিভার। এ আলাপচারিতায় সংগ্রামী জীবনের গল্প শুনিয়েছিলেন তিনি। সপ্তম শ্রেণিতে পড়াশোনা ছেড়ে দেন জনি লিভার। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার বাবা একজন মাতাল ছিলেন। তিনি কখনো আমাদের খেয়াল রাখতেন না। আমার বড় কাকা আমাদের স্কুলের বেতন এবং রেশনের জন্য অর্থ দিতেন। তাই কিছুদিন পর আমি বিরক্ত হয়ে স্কুল ছেড়ে দিই। কিন্তু আমি যখন স্কুলে পড়তাম তখন অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। আমি সবার মিমিক্রি (নকল) করতাম। এমনকী শিক্ষকদেরও।’
এখনো স্কুলের শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ৬৬ বছর বয়সী জনি লিভার। তা উল্লেখ করে এই অভিনেতা বলেছিলেন, ‘আমার ক্লাস টিচার দময়ন্তী ম্যাডাম খুব ভালো মানুষ ছিলেন। আমি এখনো তার সঙ্গে যোগাযোগ করি। আমি যখন স্কুল ছেড়ে চলে আসি, তখন তিনি ছাত্রদের দিয়ে আমাকে ডেকে নিয়ে স্কুলের ফি, জামাকাপড় কিনে দিতে চেয়েছিলেন; যাতে আমি পুনরায় স্কুলে ফিরে যাই।’
অর্থের জন্য রাস্তায় কলম-প্যান্ট বিক্রি করতেন জনি লিভার। ভিক্ষাবৃত্তি না করে বেঁচে থাকার জন্য মুম্বাইয়ের রাস্তায় এ কাজ করতেন তিনি। পরবর্তীতে বাবার কারখানায় কাজ নেন জনি। মিমিক্রি করার কারণে সেখানেও জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।
১৯৮০ সালে কল্যাণজি-আনন্দজির দপ্তরে ক্যারাম খেলছিলেন জনি লিভার। হঠাৎ সেখানে হাজির হন দক্ষিণী সিনেমার পরিচালক কে বিজয়ন। ওই সময়ে তিনি ‘ইয়ে রিস্তা না টুটে’ সিনেমার কৌতুকাভিনেতার চরিত্রে নতুন মুখ খুঁজছিলেন। গায়ক কল্যাণজি জনির নাম সুপারিশ করলে তাকে কাস্ট করেন তিনি।
১৯৮১ সালে মুক্তি পায় সিনেমাটি। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি জনিকে।