ভারতীয় পেঁয়াজের রপ্তানির বাজার খোলার ঘোষণা শুনে খাতুনগঞ্জে দাম কেজিপ্রতি ১৫ টাকা কমিয়ে দিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। তবে তা বেশিক্ষণ স্থির থাকেনি। পরের দিন তা আবারো বাড়তে শুরু করে। একদিন পর আরো ২৩ টাকা বেড়ে যায় কেজিতে।
দেশের ভোগ্যপণ্যের অন্যতম পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে বর্তমানে প্রতিকেজি পেঁয়াজ (ভারতীয়) ১১৬ থেকে ১১৮ টাকা, দেশি (মুড়িকাটা) পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১০২ টাকা এবং মেহেরপুরের পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৭৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এর আগে সোমবার ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ১০৫ থেকে ১১০ টাকায়। দেশি পেঁয়াজ ৯৫ থেকে ১০০ টাকা। আর মেহেরপুর পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৭০ থেকে ৭৩ টাকা।
আমিনুল ইসলাম নামে একজন পাইকারি ব্যবসায়ী বলেন, ‘বর্তমানে বাজারে যে পেঁয়াজগুলো আছে সেগুলোর মজুদ শেষের পথে। ভারত সরকার রপ্তানির অনুমতি দেওয়ায় পেঁয়াজের দাম কমেছিল। তবে সেটি একদিনই (গত মঙ্গলবার) ছিল। পরের দিন বুধবার থেকে আবার আগের দামে ফিরে আসে।’
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে আড়তগুলোতে এখন যে পেঁয়াজ আছে তা দেশি এবং ভারতীয়। এর মধ্যে ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতিকেজি ১১৬ থেকে ১১৮ টাকায়, দেশি পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১০২ টাকায় এবং আর মেহেরপুরের পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৭৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গত সোমবার রাতে ভারত সরকার সীমিত পরিমাণে পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে পরের দিন মঙ্গলবার ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতিকেজি বিক্রি হয় ৯০ থেকে ৯৫ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়। আর মেহেরপুর পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়।
এদিকে, বৃহস্পতিবার বিকেলে খাতুনগঞ্জের অনেক আড়তে পেঁয়াজ নেই বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, গত বছরের শেষের দিক থেকে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। মূলত এরপর থেকেই পেঁয়াজের দাম উঠানামা করছে। একদিন বাড়ে তো আরেকদিন কমে। মাঝেমধ্যে চোরাইপথে আসা ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে ঢুকেছে বলে দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে যা এসেছে তা চাহিদার তুলনায় নগন্য। ভারত থেকে নতুন করে পেঁয়াজ বাজারে ঢুকলেই দাম হাতের নাগালে থাকবে।
খাতুনগঞ্জ হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস সিভয়েস২৪-কে বলেন, ‘ভারতীয় পেঁয়াজ আসার খবরে দাম একটু কমেছিল। ভারত সরকার বিভিন্ন দেশে পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমোদন দিলেও পরিমাণ এবং কবে দেবে সেটার কোনো কিছুই নিশ্চিত করেনি। তাই আবারও দাম উঠানামা হচ্ছে। বর্তমানে দেশি (মুড়িকাটা) পেঁয়াজের সরবরাহ কমতির দিকে। আর নতুন করে যে দেশি (হালি) পেঁয়াজ আসবে; সেটি আসতে আরও ১০/১৫ দিন সময় লাগবে।’
বর্তমানে খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের দামের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ভারতীয় যে পেঁয়াজ বাজারে আছে তা চোরাইপথে এসেছে। সেগুলো পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১১৬ থেকে ১১৮ টাকায়। আর দেশি (মুড়িকাটা) পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১০২ টাকা এবং মেহেরপুর পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৭৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নতুন দেশি (হালি) পেঁয়াজ বাজারে এলে রমজানে যে চাহিদা থাকবে তা পূরণ হবে। তবে দাম কমার সম্ভাবনা নেই ‘
খুচরা বাজারে এখনো প্রভাব পড়েনি, আগের দামেই ‘স্থির’
খুচরায় কেজিপ্রতি দেশি (মুড়িকাটা) পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। কোথাও কোথাও মানভেদে পেঁয়াজের দাম ১১৫ থেকে ১২০ টাকা চাওয়া হচ্ছে। সপ্তাহ ধরে চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম-এ অবস্থায় আছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে দর-কষাকষি করলে কোথাও কোথাও পেঁয়াজের দাম খুচরায় কেজিতে পাঁচ টাকা কমেও বিক্রি করা হচ্ছে।
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, কোনো পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। পাইকারি বাজারে পণ্যের দাম বাড়লে খুচরায়ও বাড়ে। আবার সেখানে দাম কমলে আমাদেরও কমে যায়। মূলত আমাদের কেনার উপরই নির্ভর করে বিক্রির দাম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক খুচরা ব্যবসায়ী বৃহস্পতিবার বলেন, ‘মুড়িকাটা পেঁয়াজ মানভেদে প্রতিকেজি ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি করছি। পাইকারিতে একদিন (গত মঙ্গলবার) দাম কমার খবর পেয়েছিলাম। পরেরদিন আবার বেড়ে গেছে। তাই আমরাও আগের দামেই (১২৫ থেকে ১৩০ টাকা) বিক্রি করছি।’