নীলাচলের গেইটে টিকেটের টাকা আত্মসাত, পর্যটনবাহী গাড়ীর চালকদের সাথে খারাপ ব্যবহার, স্বজাতীর প্রতি আত্মীয়করণ ও নীলাম্বরী রিসোর্টে গোপন পার্টনারশীপের অভিযোগ উঠেছে নীলাচলের প্রধান গেইটম্যান ও জেলা প্রশাসনের সরকারী কর্মচারী আদিব বড়ুয়ার নামে।
স্থানীয়রা, চালকরা ও নীলাচলের দায়িত্বে থাকা কয়েকজন জানায়, নীলাচলের দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথমে সততার সাথে দায়িত্ব পালন করলেও কয়েক মাস যেতে না যেতেই টাকা হাতিয়ে নেয়ার এ কৌশল আয়ত্ব করেন সাধারণ পরিবারের সদস্য আদিব বড়ুয়া। আস্তে আস্তে পরিবর্তণ হয় আচরণেও। স্থানীয় চালক, কর্মচারীসহ সকলের সাথে করেন দূর্ব্যবহার। পকেট ভারী হতেই গোপনে পার্টনারশীপ লাভ করেন নীলাম্বরী রিসোর্টেও। নীলাচল গেইটের দায়িত্ব থাকায় গেইটের পাশাপাশি কর্টেজ পরিচালনাটাও তার জন্য সহজ হয়ে পড়ে। এ যেন কইয়ের তেলে কই ভাঁজা। এ বিষয়ে প্রশাসনিক তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিও তুলেছেন তারা।
টিকেট কাউন্টারে ও নীলাচলের দায়িত্বে থাকা কয়েকজন জানায়, আদিব বড়ুয়া প্রথমে কয়েকমাস সততার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। কয়েকমাস পার হওয়ার পরই টাকার নেশার তোপে পড়েন তিনি। শুরু করে পর্যটকদের টিকেট না দিয়ে টাকা হাতানোর কাজ। প্রতিদিন যে পরিমানে পর্যটক প্রবেশ করে তার অর্ধেক পর্যটকও দেখানো হয়না হিসেবের খাতায়। তবে প্রধান গেইটম্যান হওয়ার সুবাধে তার এ কাজের প্রতিবাদ করতে পারেননা অনেকে। তারা আরো জানায়, কয়েক বছর নীলাচলের দায়িত্ব পালন করার পর স্বচ্ছলতা ফিরেছে কয়েকগুন। গোপনে পার্টনার হয়েছেন নীলাম্বরী কর্টেজেও।
এ বিষয়ে নীলাচলের এক কর্মচারী বলেন, যেহেতু আদিব বড়ুয়া এখানকার প্রধান, তাই আমাদের এর বিরোধীতা করার সুযোগ নাই। যা বলবেন তাই করতে হবে। ওনার নির্দেশ না মানলে চাকুরী থাকবে না।
শনিবার বিকালে নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রে ঘুরে ১২জনের একটি পর্যটক দলের সাথে কথা বলে এর সত্যতাও পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে রংপুরের খান মোহাম্মদ আতাউর জানায়, তারা ১২জনের একটি দল বেড়াতে এসেছেন নীলাচলে। গেইটে যাওয়ার পর ১২জনের কাছ থেকে ৬শ টাকা নেয়া হলেও টিকেট দিয়েছে মাত্র ৭টি।
এদিকে রবিনসহ কয়েকজন চাঁদের গাড়ীর চালক জানায়, নিজের স্বজাতী হলে তাদেরকে বিনা টাকায় ভিতরে ঢুকিয়ে দেয় গাড়ীসহ। অথচ অন্যদের বেলায় অত্যান্ত কঠোর। সঠিক তদারকি না থাকা ও একজনকে দীর্ঘদিন গেইটের প্রধান হিসেবে দায়িত্বে রাখার কারণে পর্যটকদের অর্ধেক টাকা লুফে নিচ্ছে সে। এসময় বিষয়গুলো তদন্ত করে নতুন কর্মচারী দেবারও দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে জানতে নীলাচলের দায়িত্বে থাকা প্রধান গেইটম্যান ও জেলা প্রশাসনের কর্মচারী আদিব বড়ুয়াকে ফোন করলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এবং বিষয়গুলো অস্বীকার করেন। পরে ব্যস্ততার অজুহাতে মুঠোফোনের সংযোগও বিচ্ছিন্ন করেন তিনি।
বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন নীলাচলের দায়িত্বে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোজাহেরুল হক। তিনি বলেন, বিষয়গুলো জানলাম। আমি সবকিছু যাচাই করে সত্যতা বের করে ব্যবস্থা নিব।
এদিকে জেলা প্রশাসন থেকে সরবরাহ করা টিকেট ছাড়াও নিজের ছাপানো টিকেটও বিলির অভিযোগ রয়েছে তার নামে।