আগুনে পুড়ে গেছে থাকার জায়গা। এরপরও মুখে হাসি নিয়ে একটি গণমাধ্যমে শিশু জান্নাতুল বলেছিল, ‘আমার মা তো বাঁচছে এইটাই বেশি আর কিছু লাগবো না। সবকিছু পুইড়া যাকগা, আমার মা তো আছে।’ যা ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। মায়ের প্রতি জান্নাতুলের আস্থা ও ভালোবাসা দেখে আপ্লুত হয়েছিলেন সবাই।
এবার একটি বেসরকারি টেলিভিশনের একটি প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছে জান্নাত। সেখানে সঞ্চালকের বিভিন্ন প্রশ্নের সাবলিল উত্তর দেয় সে।
নিজেকে সুখী দাবি করেছে জান্নাতুল ফেরদৌস। অন্য শিশুদের গাড়িতে চড়া, দামি দামি খাবার খাওয়া দেখে জান্নাতুলের মন খারাপ হয় কি-না জানতে চাইলে সে বলে, ‘কখনোই না, তখনও মনে হয় আমি সুখি। আমার সবকিছু আছে, আমার সবকিছুই আমার মা। ওরা গাড়িতে চড়লেও ওদের বাবা-মা গাড়ি চালায়। আমরা কখনো গাড়িতে উঠলে মা জড়িয়ে ধরে রাখে।’
এই পৃথীবিতে টিকে থাকতে হলে লড়াই করে টিকে থাকতে হবে বলে জানায় জান্নাতুল। সে বলে, ‘পৃথীবিতে সবার জন্য সুখ থাকে না। সুখ লড়াই করে অর্জন করতে হয়। যে লড়াই করে সেই আগায়ে যায়। আমার মা থাকলে আমার সব সাহস ফিরে আয়। আর মা না থাকলে আল্লাহ আমাদের দেখে।’
বস্তিতে লাগা আগুনে ঘর পুড়ে যাওয়ার পর থেকে অন্যদের দেওয়া খিচুরি খেয়ে দিন কাটাচ্ছে জান্নাতুলের পরিবার। জান্নাতুল জানায়, প্রতিদিন ট্রাকে করে খিচুরি দিয়ে যায় বস্তিতে। সেখান থেকে তারাও এক প্যাকেট করে খিচুরি পায়। এই এক প্যাকেট খিচুরি পরিবারের তিনজন মিলে খায়। এখনও বস্তির সেই ঘরেই থাকছে তার পরিবার।
এক প্রশ্নের জবাবে শিশু জান্নাতুল বলে, আমাদের প্রধানমন্ত্রীও একজন নারী। আমিও একজন নারী। আমি লড়াই করবো।
গত রবিবার বিকেল ৪টার দিকে রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। আগুনে দুইশর বেশি ঘর পুড়ে যায়, এ ছাড়া আগুন ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে শতাধিক ঘর ভেঙে ফেলা হয়। এ সময় ভাঙা হয় জান্নাতুদের ঘরও।