টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন মোদি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

টানা তৃতীয় মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী পদে বসছেন নরেন্দ্র মোদি। রবিবার (৯ জুন) সন্ধ্যায় শপথ নেবেন তিনি। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিশ্বনেতাদের অনেকে ইতোমধ্যে দিল্লি পৌঁছেছেন।

ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, স্থানীয় সময় আজ রবিবার সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে শপথ নেবেন নরেন্দ্র মোদি। এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে রাজধানী দিল্লিজুড়ে সাজ সাজ রব। জারি করা হয়েছে হাই অ্যালার্ট। সঙ্গে থাকছে তিন স্তরের নিরাপত্তা। আধাসামরিক কর্মীদের পাঁচটি কোম্পানি, এনএসজি কমান্ডো, ড্রোন এবং স্নাইপার থাকছে নিরাপত্তায়। একটি পাবলিক অ্যাডভাইজরিতে দিল্লির ওপর নো-ফ্লাই জোন ঘোষণা করা হয়েছে, অনুষ্ঠান চলাকালীন অপরাধমূলক বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে বিভিন্ন এরিয়াল প্ল্যাটফরমের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই বিধিনিষেধটি ৯ জুন থেকে ১০ জুন পর্যন্ত কার্যকর হবে, লঙ্ঘনকারীদের ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৮ ধারার অধীনে শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানদের হোটেল থেকে রাষ্ট্রপতি ভবনে নিয়ে আসার রুটেও থাকবে নিরাপত্তা। লীলা, তাজ, আইটিসি মৌর্য, ক্লারিজেস এবং ওবেরয় থেকে রাষ্ট্রপতি ভবন পর্যন্ত রাস্তায় থাকছে কড়া নিরাপত্তা।

নরেন্দ্র মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সেখানে পৌঁছেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংঘে, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু, সিসিলিসের ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ আফিফ, মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবীন্দ কুমার জুগনাথ, নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল প্রচন্ড এবং ভুটানের প্রধানমন্ত্রী সেরিং তোবগে। এছাড়াও এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ৮ হাজারের বেশি বিশিষ্টজনকে।

এদিকে শনিবার রাহুল গান্ধীকে লোকসভার বিরোধী দলনেতা করার প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে। তবে রাহুল গান্ধী জানিয়েছেন, তিনি ভেবে জানাবেন। সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে দলের ৯৯টি আসন জয়ের জন্য রাহুল গান্ধীকেই কৃতিত্ব দেওয়া হচ্ছে। কংগ্রেস নেতা মানিকম ঠাকুর এর আগে বলেছিলেন, লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা হিসেবে আমরা সকলেই মনে করি রাহুল গান্ধীকে দায়িত্ব দেওয়া উচিত। এই দায়িত্ব গ্রহণ করলে তিনি ভারতের ২৩৪ জন এমপির নেতৃত্ব দেবেন।

এর আগে মঙ্গলবার ( ৪ জুন) লোকসভা ভোটের ফল ঘোষণা হয়। বুধবার প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন মোদী। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর হাতে ইস্তফাপত্র তুলে দেন তিনি। রাষ্ট্রপতি তাঁর ইস্তফা গ্রহণ করেছেন। একই সঙ্গে নতুন সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত এই পদের দায়িত্ব সামলাতে মোদীকে অনুরোধ করেছেন মুর্মু।

এর আগে শোনা গিয়েছিল, রবিবার অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিতে পারেন তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি)-র প্রধান চন্দ্রবাবু নায়ডু। তার আগের দিন শপথ নেওয়ার কথা ছিল মোদীর। এখন সূত্র বলছে, রবিবার প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নিতে চলেছেন মোদী। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ১২ জুন চন্দ্রবাবু শপথ নিতে পারেন।

প্রসঙ্গত, এবারের ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে এনডিএ পায় ২৯২টি আসন। বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ পেয়েছে ২৩৩টি আসন। অন্যান্য দলের প্রাপ্ত আসনসংখ্যা ১৮টি। তাৎপর্যপূর্ণ হল, এনডিএ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও ২০১৪ এবং ২০১৯-এর মতো এ বার বিজেপি একক ভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। কারণ, ৫৪৫ আসনের (দু’টি মনোনীত আসন-সহ) লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ২৭৩টি আসন। বিজেপি এককভাবে জিতেছে ২৪০টি আসন। তাই সরকার গঠন করতে তাদের শরিক দলগুলির উপর নির্ভর করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে বুধবারই (৫ জুন) এনডিএ-র শরিকদের নিয়ে দিল্লিতে বৈঠকে বসেছিলেন মোদী, অমিত শাহেরা। দিল্লিতেই একই দিন সন্ধ্যায় বৈঠক হয়েছে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিকদেরও।

সোস্যাল নেটওয়ার্ক

সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত