ভারত মহাসাগরে জলদস্যুর কবলে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘জাহাজটি সোমালিয়ার জলদস্যুরা জিম্মি করেছে বলা হলেও তারা সোমালিয়ার কি না তা এখনও নিশ্চিত না। আর মুক্তিপণ না দিলে জিম্মিদের হত্যার হুমকি দিচ্ছে জলদস্যুরা’- এ ধরনের সংবাদ এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে আসেনি।’
ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজের নাবিকদের সুস্থ ফেরত আনার বিষয়ে সরকার বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
বুধবার সচিবালয়ে বৈঠকের শুরুতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী। আসন্ন ঈদুল ফিতরে ফেরি, স্টিমার, লঞ্চসহ জলযান সুষ্ঠুভাবে চলাচল এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কর্মপন্থা গ্রহণের লক্ষ্যে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
অপহরণের শিকার জাহাজটি উদ্ধারের অগ্রগতি জানতে চাইলে নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যেকোনো মূল্যে আমাদের নাবিকদের দেশে ফেরত আনতে আমরা বদ্ধপরিকর। এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। আর সবশেষ প্রাপ্ত খবর নাবিক ও ক্রুরা সুস্থ এবং ভালো আছেন।’
খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আমরা এ বিষয়ে অবহিত করেছি। জাহাজটি উদ্ধারে আমরা সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা চেয়েছি। আমরা প্রথম যে বিষয়টিতে গুরুত্ব দিচ্ছি সেটা হচ্ছে, জাহাজে ২৩ জন নাবিক রয়েছেন। তাদের জীবন রক্ষা করে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে আসাটা হচ্ছে আমাদের প্রথম কাজ।
‘ডিপার্টমেন্ট অফ শিপিং, মেরিটাইম যতগুলো উইং আছে তারা কাজ করছে। সমন্বিতভাবে আমরা এটি নিয়ে আসতে পারব।’
জাহাজ উদ্ধারে ভারতের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা কীভাবে সহযোগিতা করবে সেটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আন্তর্জাতিক উইংগুলোর মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে।
নাবিকদের ফিরিয়ে আনতে কতটা সময় লাগতে পারে- এমন প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘জাহাজটি এখনও জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রণে। তাই সময়টা এখানে সুনির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।’
জলদস্যুদের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জলদস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য কিছু সংগঠন আছে। জলদস্যুদের সঙ্গে আমাদের কোনো কার্যক্রম নেই। আমাদের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের যোগাযোগ আছে। অলিভিয়া বন্দরে আমাদের জাহাজ আটকে পড়ার পর আমরা কিছু কিছু জায়গায় সহযোগিতা নিয়েছি। সেসব ক্ষেত্রে সফলতাও পেয়েছি। যেকোনো মূল্যে আমাদের নাবিকদের দেশে ফেরত আনতে আমরা বদ্ধপরিকর।’
সোমালিয়ার জলদস্যুরা জাহাজ জিম্মি করেছে বলা হলেও তারা সোমালিয়ার কি না এটি এখনও ‘আইডেন্টিফাইড’ না বলে জানান নৌ প্রতিমন্ত্রী।
‘মুক্তিপণ না দিলে জিম্মিদের হত্যার হুমকি দিচ্ছে জলদস্যুরা’- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের কাছে এ ধরনের সংবাদ এখন পর্যন্ত আসেনি।’
নাবিকদের পরিবারের উদ্বেগের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পরিবারগুলোর সদস্যরা সেখানে আটকে আছে। তাদের কীভাবে দিন কাটছে সেটি আমরা অনুভব করছি। প্রধানমন্ত্রী পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশনা দিয়েছেন। অন্যান্য জায়গায় তিনি কথা বলেছেন। নাবিকদের নিরাপদে বাংলাদেশে ফেরত আনার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, কয়লা নিয়ে আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে দুবাইয়ের দিকে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে জলদস্যুর কবলে পড়ে বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ। জাহাজটিতে ২৩ জন নাবিক-ক্রু রয়েছেন।