- জিএম কাদের বলেন, ‘এখন আমরা বন্দি হয়ে গেছি, একজনের কাছে ছাড়া যেতে পারব না। সরকার দল ভাঙতে মদদ দিচ্ছে’
জাতীয় পার্টির (জাপা) সমালোচনা করে অনেকেই দলটিকে গৃহপালিত বিরোধী দল বলে থাকেন। এ প্রসঙ্গে দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, “আগে আমাদের একটি বার্গেনিং পয়েন্ট ছিল, আমরা বার্গেনিং করে অনেক কিছু আদায় করতে পারতাম। কিন্তু ২০১৪ সালের পর থেকে আমরা সেই শক্তি হারিয়ে ফেলেছি। এখন আমাদের বলা হয় গৃহপালিত রাজনৈতিক দল।”
শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর বনানীতে দলীয় কার্যালয়ে নিজের জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, “নব্বইয়ের দশকের পর থেকে জাতীয় পার্টি আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে গেছে। ক্ষমতা থেকে সরে আসার পর পরজীবী ছিল। তবে এখন সেটাও সম্পূর্ণভাবে হারিয়ে ফেলেছি। এখন হয়েছি গৃহপালিত রাজনৈতিক দল। এটা বাস্তবতা। এটা করা হয়েছে, সরকারি দল থেকে। দলের ভেতরে সরকারের এজেন্ট ঢুকিয়ে এটা করা হয়েছে।”
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, “ক্ষমতার বাইরে থাকলে কোনো রাজনৈতিক দল টিকে থাকতে পারে না। যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা বিভিন্নভাবে জুলুম-নির্যাতন করে আমাদের রাজনীতি করতে দেয়নি। ফলে অনেকেই আস্তে আস্তে দল থেকে চলে গেছেন। অনেকেই দল করতে আসেন নিজের স্বার্থের জন্য। তারা দলের স্বার্থও দেখে না, দেশ ও জাতির স্বার্থ তো দেখেই না।”
তিনি বলেন, “২০০৮ সালে মহাজোট করার পর থেকে পরজীবী হয়ে গেছি। এটা আমাদের জন্য বড় সুযোগ ছিল। অল্প ভোটের ব্যবধানে বড় দুটি রাজনৈতিক শক্তির জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়। সেই অল্প ভোটটি আমরা দিতে পারতাম। আমাদেরকে নেওয়ার জন্য, আমাদেরকে পরজীবী করার জন্য প্রতিযোগিতা ছিল। সেটার জন্য আমাদের একটা বার্গেনিং পাওয়ার ছিল। আমরা বার্গেনিং করে অনেক কিছু আদায় করতে পারতাম। সেটা ছিল আমাদের রাজনৈতিক শক্তি।”
তিনি আরও বলেন, “এখন আমরা বন্দি হয়ে গেছি, একজনের কাছে ছাড়া যেতে পারব না। সরকার দল ভাঙতে মদদ দিচ্ছে। আইন-কানুনে মাধ্যমে আমাদের লাঙ্গল-টাঙ্গল সব নিয়ে নেওয়া হবে- এমন ধরনের ধমকিও দেওয়া হবে। ফলে দল বাঁচাব না রাজনীতি? এ সমস্যা জাতীয় পার্টি সব সময় বহন করে যাচ্ছে। কারণ আমরা লোভ-লালসা থেকে দুরে থাকতে পারি না।”
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, “দলকে যদি বাঁচাতে হয়, গৃহপালিত থেকে বেরিয়ে আসেন। দরকার হয় পরজীবী থাকব। যারা গৃহপালিত হওয়ার জন্য দায়ী, তাদের বর্জন করতে হবে।”