ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্তকারী দল সোমবার দুপুরে কলকাতার সঞ্জিবা গার্ডেনের আলোচিত ফ্ল্যাটটিতে যায়। এ সময় কলকাতা পুলিশ তাদের সঙ্গে ছিল।
সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার ঘটনা তদন্তে বর্তমানে ভারতের কলকাতায় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) তদন্তকারী দল। তদন্তকারীরা এই হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া কসাই জিহাদকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতার সঞ্জিবা গার্ডেনের আলোচিত সেই ফ্ল্যাটে গেছেন।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল সোমবার দুপুরে ওই ফ্ল্যাটে প্রবেশ করেন। এ সময় কলকাতা পুলিশ তাদের সঙ্গে ছিল।
সঞ্জিবা গার্ডেনস থেকে বেরিয়ে সোজা বাগজোলা খালে যান ডিএমপি ডিবিপ্রধান হারুন ও অন্য তদন্তকারীরা। খালটিতে যেখানে এমপি আনারের মরদেহের টুকরো ফেলা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে, বৃষ্টির মধ্যেই সে স্থানটি পরিদর্শন করেন তদন্তকারীরা।
এ সময় সেখানে উপস্থিত ভারতীয় সিআইডির কর্মকর্তাকে ডিএমপি ডিবিপ্রধান জিজ্ঞাসা করেন, এখানে বাঁশের ঝাড় কোথায়? সিআইডির কর্মকর্তা বাঁশঝাড় দেখিয়ে দিলে হারুন নিজে সেই স্থানটি সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন।
এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আমাদের একজন সংসদ সদস্যকে কলকাতায় হত্যা করা হয়েছে। তার ধারাবাহিকতায় আমরা বাংলাদেশে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছি। তাদের কাছ থেকে বেশকিছু তথ্য পেয়েছি।
‘কলকাতা পুলিশও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। আপনারা জানেন, এই হত্যার পরিকল্পনা হয়েছিল বাংলাদেশ এবং বাস্তবায়ন হয়েছে কলকাতায়। তাই আমরা নিউটাউন থানায় এসে এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে বেশকিছু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। যে রুমে এমপি আনারকে হত্যা করা হয়েছিল সেটিও পরিদর্শন করা হয়েছে।’
এর আগে রোববার সকালে ডিএমপি ডিবিপ্রধানের নেতৃত্বে কলকাতায় যায় ডিবির তিন সদস্যের একটি দল।
কলকাতা যাওয়ার আগে শাহজালাল বিমানবন্দরে হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশের তদন্ত দল কলকাতায় প্রথমে ঘটনাস্থলে যাবে। এরপর ভারতে গ্রেপ্তার জিহাদ হাওলাদারকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, জিহাদ হাওলাদার একজন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী। তার বাড়ি খুলনার দিঘলিয়া থানায়। তার বাবার নাম জয়নাল হাওলাদার। তবে জিহাদ বসবাস করত ভারতের মুম্বাই শহরে। সেখানে সে একটি মাংসের দোকানে কসাইয়ের কাজ করত।
রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে ২৩ মে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ জানান, এমপি আনারকে হত্যার পর খুনিরা তার দেহের মাংস হাড় থেকে আলাদা করে ফেলে। এরপর মাংসে হলুদের গুঁড়া ও মসলা মিশিয়ে ফ্রিজে রাখা হয়। পরে মাংস হিসেবে বাজারের ব্যাগে ভরে তা ট্রলিতে বাইরে নেয়া হয়।
এমপি আনার হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। তারা হলেন- আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, শিলাস্তি রহমান ও ফয়সাল আলী ওরফে সাজি। তাদেরকে আটদিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।