কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘কেএসআরএম কোনো ধরনের শক্তি প্রয়োগ বা সামরিক অভিযান সমর্থন করে না। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ সমাধান। যাতে নাবিকরা নিরাপদে ফিরে আসতে পারেন।’
জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর কাছাকাছি এলাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেভাল ফোর্সের একটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে। জাহাজটি এমভি আবদুল্লাহর ওপর নজরদারি করছে। তবে সামরিক অভিযান বা জোরপূর্বক জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারে রাজি নয় জিম্মি জাহাজের মালিকানা প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম গ্রুপ।
কেএসআরএম গ্রুপ সূত্র গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছে।
গত ১২ মার্চ ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। সবশেষ অবস্থান অনুযায়ী জাহাজটি এখন সোমালিয়ার গদভজিরান উপকূল থেকে দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করে রেখেছে দস্যুরা।
বাংলাদেশি ওই জাহাজের কাছে ইইউ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ মোতায়েনের খবর এমন সময়ে এসেছে, যার এক দিন আগে দস্যুরা মালিকপক্ষের সঙ্গে প্রথমবার যোগাযোগ করেছে। মালিকপক্ষ জাহাজসহ নাবিকদের ছাড়িয়ে আনতে দস্যুদের সঙ্গে সমঝোতার কাজ এগিয়ে নিচ্ছে।
ইইউ নেভাল ফোর্সের এক্সে (সাবেক টুইটার) একটি ভিডিওচিত্র এবং তিনটি স্থিরচিত্র প্রকাশ করা হয়। তাতে দেখা যায়, ইইউ নেভাল ফোর্সের অপারেশন আটলান্টার মোতায়েন করা যুদ্ধজাহাজটি বাংলাদেশের জিম্মি জাহাজের কয়েক নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছে।
যুদ্ধজাহাজ থেকে একটি হেলিকপ্টার জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজের ওপর দিয়ে উড়ে যেতেও দেখা যায় ওইসব ভিডিওতে।
এদিকে জাহাজ ও এর ক্রুদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে এখনই কোনো ধরনের সামরিক হস্তক্ষেপ চায় না এমভি আবদুল্লাহর মালিকানা প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম।
কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি ইইউর একটি যুদ্ধজাহাজ আমাদের জাহাজের কাছাকাছি অবস্থান করে নজরদারি করছে। তবে কেএসআরএম কোনো ধরনের শক্তি প্রয়োগ বা সামরিক অভিযান সমর্থন করে না। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ সমাধান। যাতে নাবিকরা নিরাপদে ফিরে আসতে পারেন।’
জানা গেছে, এর আগে ইইউ নেভাল ফোর্স জিম্মি জাহাজটি উদ্ধারে অভিযানের কথা জানালেও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সম্মতি দেয়া হয়নি।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইইউ নেভাল ফোর্স যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করলেও বাংলাদেশের সম্মতি ছাড়া বাংলাদেশি জাহাজে অভিযান চালানোর সুযোগ নেই। বাংলাদেশ সরকার ও জাহাজ মালিকপক্ষ এখন পর্যন্ত বাস্তবতার আলোকে জিম্মি জাহাজে সামরিক অভিযানের সম্মতি দেয়নি।’
এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করতে শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খোঁজা ছাড়া বিকল্প নেই। যেকোনো সামরিক অভিযান নাবিক, জাহাজ ও জাহাজের পণ্যের ক্ষতির কারণ হতে পারে।
‘তবে এটা ঠিক, যুদ্ধজাহাজ মোতায়েনের কারণে দস্যুদের ওপর একটা মনস্তাত্ত্বিক চাপ তৈরি হবে। এতে জিম্মি সমস্যার দ্রুত সমাধান হতে পারে।’