- পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টে বাংলাদেশের পতাকা ওড়ালেন চট্টগ্রামের বাবর আলী
পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টে বাংলাদেশের পতাকা ওড়ালেন চট্টগ্রামের বাবর আলী। এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছানো ষষ্ঠ বাংলাদেশি তিনি।
রবিবার (১৯ মে) বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টা ৪৫ মিনিটে এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন বাবর আলী। বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন অভিযানের প্রধান সমন্বয়ক ফরহান জামান।
বাবরের সংগঠন “ভার্টিক্যাল ড্রিমার্স” সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, “সৃষ্টিকর্তার কৃপায় এবং লাখো শুভাকাঙ্ক্ষীদের দোয়ায় প্রকৃতি মাতা বাবরকে ক্ষণিকের জন্য স্থান দিয়েছেন নিজের চূড়ায়। খানিক আগে বেসক্যাম্প ম্যানেজার এবং আউটফিট মালিক আমাদের এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এখন বাবর আছে ক্যাম্প-৪ এ নামার পথে। ওই ডেথ জোনে যোগাযোগ সম্ভব নয়। তাই অভিযানের ছবি পেতে সময় লাগবে।”
বাবর আলীর এই অভিযানে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে এভারেস্ট ফার্মাসিউটিক্যালস, ভিজুয়াল নিটওয়্যারসসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন।
বাবর এভারেস্ট জয় করেই ক্ষান্ত নন জানিয়ে অভিযানের এ প্রধান সমন্বয়ক বলেন, “এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছানোয় আমরা ভীষণ আনন্দিত। কিন্তু বাবর আলীর লক্ষ্য শুধু এভারেস্ট নয়। তিনি একই সঙ্গে বিশ্বের চতুর্থ উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ লোৎসেও জয় করতে চান। রবিবার ক্যাম্প-৪-এ নেমে মাঝরাতে আবারও পর্বতারোহণ শুরু করবেন বাবর। সবকিছু ঠিক থাকলে সোমবার (২০ মে) ভোরে লোৎসেও জয় করবেন তিনি।”
ফরহান জামানের দেওয়া তথ্যমতে, এর আগে কোনো বাংলাদেশি লোৎসে পর্বতশৃঙ্গে সামিট করেননি। আবার একই অভিযানে দুটি আট হাজারী শৃঙ্গে চড়েননি। লক্ষ্য পূরণ হলে পর্বতারোহণে বাবর আলী বাংলাদেশের হয়ে ইতিহাসের নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করবেন।
গত এক দশকে হিমালয়ের নানা পর্বত জয় করেছেন পেশায় চিকিৎসক বাবর আলী। এর মধ্যে ২০২২ সালে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে হিমালয়ের অন্যতম দুর্গম চূড়া আমা দাবলাম (২২ হাজার ৩৪৯ ফুট) আরোহণ করেন বাবর।
বাবর আলী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) থেকে এমবিবিএস পাশ করেছেন। ৩৩ বছর বয়সী এ যুবক লেখাপড়া শেষে শুরু করেছিলেন চিকিৎসাপেশা। তবে থিতু হননি। চাকরি ছেড়ে দেশ-বিদেশ ঘোরার কর্মযজ্ঞ শুরু করেন। তবে চাকরি ছেড়ে দেশ-বিদেশ ঘোরার কর্মযজ্ঞ শুরু করেন।
এর আগে ২০১০ সালের ২৩ মে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্টের চূড়ায় উঠেছিলেন মুসা ইব্রাহিম। সেই অভিযাত্রায় মুসার সঙ্গে মুহিতও ছিলেন। তবে বিরূপ আবহাওয়ার কারণে মুহিতকে এভারেস্ট জয় না করেই ফিরে আসতে হয়। কিন্তু ঠিক এক বছর পর ২০১১ সালের ২১ মে দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয় করেন এম এ মুহিত। পরের বছর প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে দ্বিতীয়বার এভারেস্ট জয়ের গৌরব অর্জন করেন এম এ মুহিত।
২০১২ সালের ১৯ মে তৃতীয় বাংলাদেশি এবং প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে এভারেস্ট জয় করেন নিশাত মজুমদার। একই বছর এভারেস্ট শিখরে বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান ওয়াসফিয়া নাজরিনও। এরপর ২০১৩ সালে এভারেস্ট জয় করেন মোহাম্মদ খালেদ হোসেন। তবে তিনি ফেরার পথে আকস্মিকভাবে মারা যান। বাংলাদেশের এই পর্বতারোহী ও চলচ্চিত্র নির্মাতা সজল খালেদ নামে পরিচিত ছিলেন।