চট্টগ্রাম বে টার্মিনালের জমি অধিগ্রহণের ৪ বছর পর কাটল জটিলতা। অবশেষে ৫০০ একর জায়গা বন্দরকে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়। ৩ হাজার কোটি টাকার এ জায়গা মাত্র ৩ কোটি টাকায় পাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এতে আশার আলো দেখছেন ব্যবসায়ীরা।
বে টার্মিনাল অপারেশনে গেলে বছরে চট্টগ্রাম বন্দরে ৫০ লাখের বেশি কনটেইনার হ্যান্ডলিং হবে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত সুরাহা হলো চট্টগ্রাম বে টার্মিনালের জমির মূল্য পরিশোধ জটিলতার। মাত্র ৩ কোটি টাকার বিনিময়ে প্রথম পর্যায়ে ৩০ বছর এবং পরিবর্তী সময়ে নবায়ন হিসেবে ৯০ বছরের জন্য ৫০০ একর জায়গা চট্টগ্রাম বন্দরকে বন্দোবস্ত দিতে সম্মত হয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়। অধিগ্রহণ করা এই জমি জেলা প্রশাসন বন্দরের কাছে হস্তান্তর না করায় চার বছরের বেশি সময় ধরে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, জেলা প্রসাশক থেকে অনুমতি পেলে পেমেন্ট দিয়ে জমিটি চট্টগ্রাম বন্দরের অধীন নিয়ে আসা হবে।
প্রাথমিক মাস্টার প্ল্যান তৈরির পাশাপাশি ২০১৭ সালে শুরু হয় বে টার্মিনালের ভূমি অধিগ্রহণের কাজ। চার বছর আগে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন প্রায় ৮০০ একর ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ করে। কিন্তু অধিগ্রহণ করা জমির মূল্য পরিশোধ নিয়ে শুরু হয় জেলা প্রশাসনের সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের রশি টানাটানি।
জেলা প্রশাসন জমির মূল্য হিসাবে ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা পরিশোধের অনুরোধ জানালে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রতীকি মূল্যে এই জমি দাবি করে। তবে জেলা প্রশাসনের বিরোধিতা সত্ত্বেও ভূমি মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্তকে আশার আলো হিসাবে দেখছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।
বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি খায়রুল আলম সুজন বলেন, দ্রুত জমিটি বন্দর কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তরে এগিয়ে আসতে হবে জেলা প্রশাসনকে।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. আরিফ বলেন, শিপিং খাতকে দ্রুত এগিয়ে নিতে চাইলে জরুরি ভিত্তিতে জমি হস্তান্তর কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।
চলতি বছর নির্মাণকাজ শুরু হয়ে ২০২৬ সালের মধ্যে বে টার্মিনাল অপারেশনে যাওয়ার কথা থাকলেও ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে তা অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম সোহায়েল বলেন, ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব নিয়ে অপেক্ষায় রয়েছে সিঙ্গাপুর পোর্ট অথরিটি, আরব আমিরাতের ডিপি ওয়াল্ডসহ আরও বেশকয়েকটি প্রতিষ্ঠান।
বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, নাব্য সংকট না থাকায় যে কোনো আকৃতি কিংবা গভীরতার জাহাজ অনায়াসে এই বন্দরে আসতে পারবে। বছরে এখানে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হবে ৫০ লাখের বেশি।