আরও বাড়বে তাপমাত্রা, তিন বিভাগে বৃষ্টির আভাস

সিনিয়র রিপোর্টার

  • তীব্র গরমের কারণে পাবনা শহরে এবং গাজীপুরের কোনাবাড়িতে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসকদের ধারণা, তাদের মৃত্যুর কারণ ‘হিটস্ট্রোক’

 

দেশজুড়ে যে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তা আরও বাড়ার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। চলমান তাপপ্রবাহ এপ্রিল মাসজুড়েই অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান। তিনি বলেছেন, “অক্টোবর মাসেও গরম থাকবে, তবে কী পরিস্থিতি হবে- সেটা সামনে বোঝা যাবে।”

এদিকে যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। শনিবার (২০ এপ্রিল) যশোরে থার্মোমিটারের পারদ উঠেছে ৪২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এ দিন ঢাকার তাপমাত্রা চলতি মৌসুমে প্রথমবারের মত ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে।

দেশজুড়ে এমন তীব্র গরমের মধ্যে পাবনা শহরে এবং গাজীপুরের কোনাবাড়িতে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসকদের ধারণা, তাদের মৃত্যুর কারণ “হিটস্ট্রোক”।

শনিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে ৪২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এর আগে চার দিন ধরে টানা সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায়। শনিবার চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ছিল ৪২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বাতাসে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ ধরা হয়। ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে বলা হয় মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। এরপর ৪২ ডিগ্রির উপরে উঠলে তাকে বলা হয় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।

তীব্র তাপদাহের কারণে এবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সব স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা এবং কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাত দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। ফলে আগামী ২৮ এপ্রিল খুলবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো।

স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ১৮ মে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪৫.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশে আবহাওয়ার রেকর্ড রাখা শুরুর পর এটাই সর্বোচ্চ তাপমাত্রার নজির।

তাপপ্রবাহের বিষয়ে শনিবার সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, দেশের ৪৩ জেলার ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। যশোর ও চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। খুলনা বিভাগের বাকি অংশ, রাজশাহী ও পাবনা জেলা এবং ঢাকা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বইছে। ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, ফেনী, কক্সবাজার, চাঁদপুর, রাঙামাটি; রাজশাহী বিভাগের বাকি ছয় জেলা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

এপ্রিল বাংলাদেশের উষ্ণতম মাস। এ মাসে গরমের পাশাপাশি কালবৈশাখীরও দাপট থাকে বেশি। এ বিষয়ে আজ সকালে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

তাপপ্রবাহের বিষয়ে বলা হয়েছে, পাবনা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলায় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। রাজশাহী জেলাসহ খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং ঢাকা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, ফেনী, কক্সবাজার, চাঁদপুর ও রাঙ্গামাটি জেলাসহ বরিশাল বিভাগ এবং রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

তাপমাত্রার বিষয়ে বলা হয়েছে, রংপুর বিভাগের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে এবং অন্যত্র তা প্রায় একইরকম থাকতে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।

সোস্যাল নেটওয়ার্ক

সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত