আনোয়ারায় কুখ্যাত সন্ত্রাসী হাছানের বিরুদ্ধে গৃহবধূকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ

আনোয়ারা প্রতিনিধি

আনোয়ারা উপজেলাধীন পশ্চিম রায়পুর ৬ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ কালীর বাড়িতে স্থানীয় এক শীর্ষ সন্ত্রাসী ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে এক গৃহবধূকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্তরা হলেন মৃত মীর আহমদ এর পুত্র মো. হাছান (৪৭) ও মো. হোসেন (৪০)।

এ ঘটনায় ভিক্টিম রোকসানা আক্তার (৩২) স্বামী মো. ছবুর বাদী হয়ে আনোয়ারা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। এছাড়া বিজ্ঞ আদালতে আরেকটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন তিনি।

অভিযোগ ও মামলা মতে জানা যায়, হাছানের ছেলে ফুটবল খেলার সময় পার্শ্ববর্তী রোকসানা আক্তারের পারিবারিক কবরস্থানে বল পড়ায় কবরস্থানের পবিত্রতা নষ্ট হবে তাই হাছানের ছেলেকে বল না ফেলতে বলে রোকসানা আক্তারের ছেলে এমদাদ।

এতে ক্ষুব্ধ হয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে কাছেই দাঁড়িয়ে থাকা হাছান ও হোসেন এমদাদকে মারার জন্য ধাওয়া করে। ছেলেকে ধরতে ব্যর্থ হওয়ায় হাছান ও হোসেন এমদাদের মা রোকসানা আক্তারকে ঘর থেকে উঠানে চুল ধরে টেনে নিয়ে বের করে চোখে মুখে উপর্যুপরি কিল ঘুষি মারতে থাকে এবং তলপেটে লাথি মারে। হাছানের ভাই হোসেন রোকসানাকে গাছের বাঠাম দিয়ে পিঠে ও দুই হাতের বাহুতে, পায়ের রানে পিটিয়ে জখম করে এবং রোকসানার সিজারের স্থানে সজোরে লাথি মারে। এ সময় মাকে বাঁচানোর জন্য রোকসানার মেয়ে ইশপা এগিয়ে আসলে তাকেও চুল ধরে টানাটানি ও একাধিক চড় থাপ্পড় মেরে আহত করে হাছান ও হোসেন। যাওয়ার সময় তারা রোকসানার ছেলে এমদাদ ও রোকসানাকে হত্যা করবে এই হুমকি দিয়ে চলে যায়।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী রোকসানা আক্তার বলেন, “হাছান আগেও আমার শ্বশুর ও শ্বাশুড়িকে বৃদ্ধাবস্থায় মারধর করেছিল। এতে আমার শ্বশুর ও শ্বাশুড়ি কিছুদিনের মধ্যেই মৃত্যুবরণ করেন। সে আওয়ামীলীগের রাজনীতি করে। তাই এলাকার কাউকে সে পরোয়া করে না। কেউ ভয়ে তার বিরুদ্ধে কথা বলতে চায় না।”

প্রত্যক্ষদর্শী এক মহিলা বলেন, “হাছান সেদিন বাচ্চাদের ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে রোকসানাকে লাঠি ও লোহার রড দিয়ে বেধড়ক পিঠায়। এতে ভুক্তভোগী অনেক আহত হয়। পরে তাকে আমরা সবাই হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়ায়।”

একই এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, “হাছানের বিরুদ্ধে এর আগেও অনেক হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আছে। সে যাকে তাকে যখন তখন মারতে থাকে। সে হিংস্র প্রাণীর মত সবার সাথে আচরণ করে।”

স্থানীয় এক সচেতন ব্যক্তি বলেন, “হাছান স্থানীয় এলাকার কুখ্যাত সন্ত্রাসী। এলাকার অনেক বৃদ্ধ, বনিতা, গৃহবধূ ও শিশু কেউ তার হাত থেকে রেহাই পায়নি। তার বিরুদ্ধে এলাকার সোহাগ খাতুন, আমেনা খাতুন, মো. ইউনূস, আলী আকবর, মো. রফিক প্রমুখদেরকে মানসিক ও শারীরিক আঘাত করে মেরে ফেলার অভিযোগও আছে। এলাকার কাউকে সে পরোয়া করে না। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিলে গ্রামবাসী শান্তিতে থাকবে।”

এ ব্যাপারে আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনির বলেন, “আমরা অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রেকর্ড করার জন্য আদালতের অনুমতির জন্য আবেদন করেছি। আদালত অনুমতি দিলে মামলা রেকর্ড করে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।”

সোস্যাল নেটওয়ার্ক

সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত