বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের মধ্যমপাড়া পাঞ্জেগানা মসজিদে নিয়মিত আজান দেন সত্তোর্ধ বৃদ্ধ আবদুস সোবহান। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো আজ মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভোরে ফজরের আজান হয়। একজন মানুষও নামাজে আসেননি। সবার মধ্যে গোলাবারুদের ভয় কাজ করছে।
মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে ৮টা পর্যন্ত ঘুমধুমের মধ্যমপাড়া এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গ্রামে কয়েকজন পুরুষ ছাড়া কেউ নেই। নারী-শিশুরা গ্রাম ছেড়ে অন্যত্রে অবস্থান নিয়েছে। ঘরের বাইরে খুব কম মানুষকে দেখা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, মিয়ানমারের সীমান্তে গতকাল সোমবার রাত ৯টা থেকে আজ মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৬টা পর্যন্ত অনবরত গোলাগুলির শব্দে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে এপারের বাসিন্দারা। রাতভর গোলাগুলি ও মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ও উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ওপারে মিয়ানমারের ঢেঁকিবনিয়া সীমান্তে।
ঘুমধুম উচ্চবিদ্যালয়–সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা ছৈয়দ নুর (৬৫)। তিনি বলেন, ‘এখন যতটুকু ভয় পাচ্ছে মানুষ, স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়ও এত ভয় পায় নাই। ওই সময় মানুষ সামনে থেকে যুদ্ধ করেছে। এখন সংঘর্ষ চলছে ওপারে, আমাদের করার কিছু নেইও। রাতে ঘরে কেউ ছিলেন না। আমি বালুখালী থেকে মাত্র এলাম।’
স্থানীয় লোকজন বলেন, ঢেঁকিবনিয়া সীমান্তচৌকি দখলকে ঘিরে রোববার রাত থেকে থেমে থেমে আরকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সংঘর্ষ চলছে।
পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘সোমবার রাত নয়টা থেকে দুই পক্ষের লড়াইয়ের ভয়াবহতা বেড়ে যায়। এত কম্পন আমরা আর দেখিনি। একেকটি গোলা নিক্ষেপের পর পুরো এলাকাজুড়ে কেঁপে ওঠে। একটি রাত নির্ঘুম কাটিয়ে দিয়েছেন লোকজন।’
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, রাতে নির্ঘুম রাত পার করেছে মানুষ। মর্টার শেলে দুজন নিহত হওয়ার পর আতঙ্ক দ্বিগুণ বেড়েছে। সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। অপ্রয়োজনে কাউকে বাড়ি থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।